আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: আওয়ামী লীগের ভাঙা-গড়ার দীর্ঘ ইতিহাস তুলে ধরে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে হীরার টুকরা, যত কাটবে তত জ্বলজ্বলে হবে। তিনি বলেন, এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রাজপথে রক্ত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ দেশের গণমানুষের সংগঠন। অধিকারহারা মানুষের সেই বঞ্চনা ও শোষণ আওয়ামী লীগ দেখেছে। তাই মানুষের দুঃখকষ্ট ও যন্ত্রণা উপলব্ধি করেন দলের নেতাকর্মীরা।
আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি। সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা সভায় যুক্ত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সত্যিকারের গণমানুষের দল হিসেবে যদি বাংলাদেশের জন্য দল থেকে থাকে সেটা হচ্ছে একমাত্র আওয়ামী লীগ। আপনার অনেকে অনেক কিছু বলেন, কিন্তু আপনারা এই জিনিসটা কখনো কেউ উপলব্ধি করেন না।
তিনি বলেন, দল যদি শক্তিশালী না হয় তাহলে কোনো কাজই সঠিকভাবে করা যায় না। শুধু সরকার দিয়ে হয় না, পাশে শক্তিশালী সংগঠনও থাকতে হয়। যদি সেটা থাকে তাহলে যেকোনো অর্জন সম্ভব। আজকে আমরা যতটুকু অর্জন করেছি, আমি মনে করি, এই সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ আমার সঙ্গে ছিল বলেই আমরা এই অর্জনগুলো করতে সক্ষম হয়েছি। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসের সাথে এ দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস জড়িত। এদেশের সাংস্কৃতিক মুক্তির কথা জড়িত।
এ দেশের সামাজিক নিরাপত্তার কথা এবং সামাজিকভাবে যতটুকু অর্জন, অর্থনৈতিকভাবে যতটুকু অর্জন, সবকিছুর পেছনেই শক্তিশালী আওয়ামী লীগ সংগঠন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য দলগুলো জনগণের জন্য কাজ না করে পতাকার আশায় বসে থাকে। ক্ষমতার পেছনে ছুটে। অরাজনৈতিক শক্তির পদলেহন করে।
দেশের চার লাখ গৃহহীন মানুষকে ঘর দেয়া, ৯৯ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় নিয়ে আসাসহ দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের কথা স্মরণ করিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়ন কোনো ম্যাজিক না, আমাদের পরিকল্পনা। একটা দর্শন, একটা আদর্শ। শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক ধারাটা আমরা বজায় রাখতে গিয়ে আমাদের পদে পদে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে।
জীবন্ত মানুষকে অগ্নিসন্ত্রাস করে হত্যা করা, পুড়িয়ে মারা আমরা দেখেছি। ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা, নিরীহ মানুষ হত্যা করা, নানাভাবে তারা চেষ্টা করেছে এই দেশটাকে অস্থিতিশীল করতে। দলীয় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, যখনই যে ডাক আমরা দিয়েছি এবং যে কাজ আমরা করেছি, নিজের জীবনকে বাজি রেখে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে থেকেছে। জনগণের পাশে থেকেছে, জনগণের জানমাল রক্ষা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই এ দেশের মানুষ আরও উন্নতি করতে পারবে। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কারণ আমরা লক্ষ্য স্থির করেছি। অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের কিন্তু এ ধরনের কর্মসূচিও নেই, চিন্তাভাবনাও নেই। আমাদের অর্থনৈতিক নীতিমালা, আমাদের গঠনতন্ত্র মেনে সংগঠন করি। যখন আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসি, দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে ঘোষণা দিয়েছি এবং তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
আমরা শুরু থেকেই এটা চিন্তা করেছিলাম বলেই এবং সে পরিকল্পনা আমরা নিয়ে রেখেছিলাম বলেই তা বাস্তবায়ন করতে সহজ হয়েছে এবং এত অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে।
-এটি