মোস্তফা ওয়াদুদ: কোরআন তেলাওয়াত করে আলোচিত (মানসিক ভারসাম্যহীন) মো. সিরাজ মিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখা।
গতকাল শুক্রবার (১১ জুন) রাজধানীর সানারপাড় এলাকায় সিরাজ মিয়ার বাসায় যান ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের আহবায়ক রাশেদ খাঁন, ও পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃৃবৃন্দ।
এ সময় ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘কোরআন শরীফ আল্লাহ তায়ালার কিতাব। কুরআন যেমন মূল্যবান তেমনি কুরআনের সাথে যার সম্পর্ক তিনিও মূল্যবান হয়ে যান। আমরা আজকে কোরআনের ভালোবাসাই এ চাচার কাছে ছুটে এসেছি। এবং আমাদের ইঞ্জিনিয়ার একজন প্রবাসী ভাইয়ের সহযোগিতায় আমরা তাকে দুটি ব্যাটারি উপহার দিতে পেরেছি।’
আলোচনা শেষে মানসিক ভারসাম্যহীন লোকটির বড় ছেলে মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের হাতে সিরাজ মিয়ার স্থায়ী কর্মসংস্থানের জন্য অটোরিকশার দুটো ব্যাটারি উপহার প্রদান করেন তারা।
এক পোস্টে রাশেদ খান জানান, ‘চাচার পরিবার জানিয়েছিলো, তাদের একটি অটোরিকশা আছে, কিন্তু ব্যাটারি নষ্ট, ব্যাটারি প্রদান করলে সবচেয়ে উপকার হয় তাদের। সেজন্য দুটো ব্যাটারি দেওয়া হলো। ব্যাটারি দুটির মূল্য ১৮৭০০ টাকা। নগদ উপহার ১৩০০ টাকা। মোট ২০০০০ টাকা (ব্যাটারির মূল্য + নগদ) উপহার প্রদান করা হলো।’
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার আহবায়ক মো. আতাউল্লাহ।
এর আগে গত (৮ জুন) মঙ্গলবার রাজধানীর সানারপাড় এলাকায় চায়ের দোকানের সামনে তাকে পবিত্র কোরআনুল কারিমের আয়াতুল কুরসি অংশ পড়তে দেখা যায়। এ সময় তার তেলাওয়াতে বেশ মুগ্ধতা ছড়ায়। দুয়েকটি জায়গা ছাড়া খুব সুন্দর লেহজায় তেলাওয়াত করতে দেখা যায় তাকে।
এদিকে আয়াতুল কুরসি পড়ার সময়ের চিত্রটি মোবাইলে ধারণ করেন, আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত কারী আবু রায়হান। আর ভিডিওতে কথা বলতে দেখা যায় তার উস্তাদ মুফতি আব্দুল কাইয়ুমকে।
মুফতি আব্দুল কাইয়ুম এ বিষয়ে আওয়ার ইসলামকে বলেন, ভিডিওটি আমি ধারণ করি গত মঙ্গলবার (৮ জুন) বিকাল পাঁচটায়। এরপর সাড়ে পাঁচটার দিকে সেটা আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে পাবলিশ করি। তারপর ‘আর রায়হান ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসা’র ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাবলিশ করলে অনেকেই শেয়ার করেন। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে শেয়ার করেন ইসলামিক সংগীতশিল্পী মুহাম্মদ বদরুজ্জামান। এরপরেই ভাইরাল হয়ে যায় সানারপাড় চায়ের দোকানের সামনে তেলাওয়াত করা এ ব্যক্তি।’
ধারণকরার বিষয়ে মুফতি আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘প্রথমে আমি তাকে শুধু তেলাওয়াত করতে দেখেছি। তারপর ভাবলাম একটু ভিডিও করি। ভিডিওর পর যখন পুনরায় তার তেলাওয়াত শুনছিলাম, তখন আমাকে বেশ মুগ্ধ করেছে। আর তখনই সেটি পাবলিশ করি।’
এরপর ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহমুদ হাসান ভাইরাল এ তেলাওয়াতকারীর পুনর্বাসনের জন্য তার পরিবারের প্রাথমিক সহায়তা, চিকিৎসা ও তার সন্তানদের লেখাপড়ার খরচের বিষয়ে সহযোগিতা করেন।
সে সময় ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইসলাম এন্ড লাইফ এর চেয়ারম্যান জানান, তাকে ও তার পরিবারকে প্রাথমিক সহায়তা করা হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং তার ছোট বাচ্চার পড়াশোনার দায়িত্ব গ্রহণ করা হয়েছে।
এমডব্লিউ/