আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি হেফাজতে রায়হান আহমদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (২ জুন) দুপুরে ভার্চ্যুয়াল শুনানি শেষে তার জামিন নামঞ্জুর করেন সিলেট মহানগর দায়রা জজের আদালত।
আকবরের পক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেছিলেন। শুনানি শেষে বিচারক মুহা. আবদুর রহিম এক আদেশে জামিন নামঞ্জুর করেছেন। সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নওশাদ আহমদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নওশাদ আহমদ চৌধুরী বলেন, জামিন আবেদনের শুনানিতে প্রধান আসামি আকবরের পক্ষের আইনজীবীরা আকবর দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন। তিনি পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলার আসামি। রায়হানকে নির্যাতনে তিনি সরাসরি জড়িত নন প্রভৃতি তুলে ধরে তার জামিন প্রার্থনা করেন।
তিনি বলেন, আমি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আদালতকে বলেছি, যে অভিযোগপত্রভুক্ত প্রধান আসামি আকবর শুধু পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগে নয়, দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় অভিযুক্ত। বিচারপ্রক্রিয়ায় থাকা কোনো হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে জামিন দেওয়া প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তা ছাড়া ঘটনার পর আকবরের পালিয়ে যাওয়া, ধরা পড়ার পর স্বীকারোক্তি এবং পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানকে নির্যাতন করার প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ সদস্যদের জবানবন্দির বিষয়টিও আদালতকে অবহিত করি। এসব যুক্তি উপস্থাপন করায় আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন।
গত বছরের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয়। ১১ অক্টোবর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ অক্টোবর পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে যান আকবর। পলাতক আকবরকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন গড়ে উঠলে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ধরা পড়ার পর আকবর বলেছিলেন, তিনি পালিয়ে ভারত চলে গিয়েছিলেন।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অভিযোগপত্রে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই (সাময়িক বরখাস্ত) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (৩২) প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন-সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী (৪৩), কনস্টেবল মুহা. হারুন অর রশিদ (৩২), টিটু চন্দ্র দাস (৩৮), ফাঁড়ির ‘টুইআইসি’(সেকেন্ড-ইন-কমান্ড) পদে থাকা সাময়িক বরখাস্ত এসআই মুহা. হাসান উদ্দিন (৩২) ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান (৩২)।
-এএ