আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার তৈরি অত্যাধুনিক এস-৪০০ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ভারত। ‘মিত্রদেশ’ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার হুমকি উপেক্ষা করেই নির্ধারিত সময়েই ক্ষেপণাস্ত্রটি হাতে পেতে চায় দেশটি। অবশ্য নির্ধারিত সময়েই ভারতের হাতে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাশিয়াও।
মঙ্গলবার (১ জুন) ব্রিকস’র সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এই ঘোষণা দেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কিনতে ভারত বদ্ধপরিকর এবং দেশটির কাছে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই এ ব্যবস্থা হস্তান্তর করা হবে।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সরবরাহের পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন করিনি এবং ভারতও এটি গ্রহণের সিদ্ধান্ত অটল রয়েছে।’ রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, ভারতের সঙ্গে মস্কোর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, প্রতিরক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা বা সংক্ষেপে ব্রিকস গঠিত হয়েছে ভারত, রাশিয়া, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলকে নিয়ে। ২০০৬ সালের জুন মাসে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
সম্প্রতি রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সমরাস্ত্র রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান রোসোবোরোনেক্সপোর্ট- এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলেক্সান্ডার মিখাইয়েভ বলেন, চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ভারত এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার প্রথম চালান হাতে পাবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে রাশিয়ার কাছ থেকে পাঁচটি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার চুক্তি করে ভারত। ২০২৫ সালের মধ্যে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ভারতের হাতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ৫০০ কোটি ডলার মূল্যের এ চুক্তির মধ্যে নয়াদিল্লি ইতোমধ্যেই মস্কোকে ৮০ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে।
অবশ্য ওয়াশিংটন এরই মধ্যে দিল্লিকে সতর্ক করে বলেছে, যদি তারা রাশিয়ার কাছ থেকে ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনে তবে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে। এর আগে এস-৪০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনায় তুরস্কের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নিয়েছিল ওয়াশিংটন। আর তাই তুরস্কের মতো ভারতের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল এবং ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে রাশিয়ার ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা এবং গোয়েন্দা বিভাগও ওই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে।
ফলে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রুশ অস্ত্র কিনলে সংশ্লিষ্ট দেশকেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে হতে পারে।