রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছেন এরদোগান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: দীর্ঘদিনের বিবাদ মিটিয়ে উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান।

গতকাল মঙ্গলবার (১ জুন) তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম টিআরটি হাবেরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের এমন মনোভাবের কথা জানান তিনি।

এরদোগান বলেছেন, মিশর ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে চায় তুরস্ক। এখানে কেউ হারবে না। বরং নিজ নিজ জায়গা থেকে সবারই জয় হবে।

বছরের পর বছর ধরে মিশর ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ২০১২ সালের ৩০ জুন মিশরের ইতিহাসের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মুসলিম ব্রাদারহুড নেতা মোহাম্মদ মুরসি।

এর এক বছরের মাথায় ২০১৩ সালের ৩ জুলাই সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুরসিকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন সেনাপ্রধান জেনারেল সিসি। প্রতিবাদে মুরসি সমর্থকরা রাস্তায় নামলে ব্রাদারহুডের প্রায় হাজার খানেক নেতাকর্মীকে হত্যা করে সরকারি বাহিনী। অভ্যুত্থানে সমর্থন দেয় ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো।

সরকারিভাবে বিবৃতি দিয়ে মুরসি সমর্থকদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে জেনারেল সিসির প্রতি সমর্থন জানায় সৌদি আরব। অন্য দিকে মোহাম্মদ মুরসির পক্ষে জোরাল ভূমিকা নেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয় মিশরের জান্তা সরকার। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুরস্কের সঙ্গে মিশরের সম্পর্ক ছিন্ন হয়।

২০১৭ সালের ৫ জুন কথিত সন্ত্রাসবাদে সমর্থনের অভিযোগ এনে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশর। পরে ওই অবরোধ প্রত্যাহারে ১৩ দফা দাবি তুলে ধরে সৌদি জোট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল আল-জাজিরা টেলিভিশন বন্ধ করে দেওয়া, কাতার থেকে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি প্রত্যাহার এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা।

যদিও সৌদি জোটের দাবি প্রত্যাখ্যান করে উল্টো তুরস্কের দিকে আরও বেশি ঝুঁকে পড়ে কাতার। তুরস্কও কাতারের সমর্থনে এগিয়ে আসে। বলা চলে, তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান একাই সৌদি আরবের কাতার বিরোধী অবরোধ ব্যর্থ করে দেন। এ ঘটনা তুরস্কের প্রতি রিয়াদের ক্ষোভের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।

সর্বশেষ ২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগির নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর দুই দেশের সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি ঘটে। মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বর্বরোচিত ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য এমবিএস নামে পরিচিত সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করা হয়।

অন্য দিকে সৌদি প্রভাব বলয়ে থাকা মধ্যপ্রাচ্যের রাজতন্ত্র শাসিত অন্য দেশগুলোর সঙ্গেও তুরস্কের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সৌদি আরবে তুর্কি পণ্য বর্জনেরও ডাক দেওয়া হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এক পর্যায়ে উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোয়নে আগ্রহী হয়ে উঠে তুরস্ক। মঙ্গলবার টিআরটি হাবেরকে দেওয়া এরদোগানের সাক্ষাৎকারে সে বিষয়টিই আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি, দ্য গার্ডিয়ান

-এটি


সম্পর্কিত খবর