আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: চলমান বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এক সংবাদ সম্মেলন করেছে। এতে বাজেট বিষয়েও নিজেদের কিছু বক্তব্য তুলে ধরেছেন তারা। তবে বাজেট নিয়ে সংগঠনটির দলীয় প্রস্তাবনা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন দলটির আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
আজ রোববার (৩০ মে) রাজধানীর পুরানা পল্টনের নিজস্ব কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
বক্তব্যে প্রাধান্য পেয়েছে, বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ‘একসেপ্ট ইসরাইল’ শব্দ বাদ, আসন্ন জাতীয় বাজেট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়াসহ দেশব্যাপী চলমান জেল-জুলুম ও মামলা প্রসঙ্গ।
বাজেপ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘোষিত হবে আগামী ৩ জুন। বাজেট হলো একটি দেশের আগামী একবছরের ব্যয় নির্বাহের জন্য জনমানুষের দেয়া টাকা খরচের পরিকল্পনা। এখানে আশা করা বাঞ্ছনীয় যে, বাজেট প্রণয়নের আগে জনমানুষের সাথে আলাপ করা হবে। আদতে তা হয় না। অর্থ মন্ত্রণালয় কিছু ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের সাথে আলাপ করে, সমাজ ও বাস্তবতা বিমুখ আমলাদের দিয়ে বাজেট তৈরি করে। ফলে আমাদের বাজেটের কলেবর বাড়ে, কথার ফুলঝুরি উপচে পরে, কিন্তু কাজের কাজ কমই হয়।
এ সময় তিনি ৮টি মৌলিক দাবী উপস্থাপন করেন। তন্মেধ্যে রয়েছে,
১. বাজেট উপস্থাপনের আগে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে আলাদা করে আলোচনা করতে হবে।
২. কল্পনাবিলাস বাদ দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের সক্ষমতা পরিমাপ করে সে অনুযায়ী বরাদ্দ দেয়া। আমরা জানি গত অর্থবছরে চিকিৎসা গবেষণায় টাকা রাখা হলেও তার কোন টাকা ব্যবহার হয় নাই। তারপরেও এবছর আবারো চিকিৎসা গবেষণা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এমন উদাহরণ আরো অনেক দেয়া যাবে। সক্ষমতাহীন এমন বরাদ্দ দুর্নীতির রাস্তা খুলে দেয়।
৩. ঋণ ও অনুদান নির্ভর বাজেট থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। স্বাধীনতার ৫০ বছরের কোনো দেশের পক্ষে ঋণ ও অনুদান নির্ভর বাজেট শোভা পায় না।
৪. শিক্ষা ও জনসম্পদ উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। এখানে প্রসঙ্গত বলে রাখি, বাজেটের বরাদ্দ দেখানোর ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা কাম্য। শিক্ষাখাতে যে বরাদ্দ দেখানো হয়, তার সাথে অন্যখাতও জুড়ে দেয়া হয়। আমরা মনে করি, এই চতুরতা বাদ দেয়া উচিৎ।
৫. আমরা গত বাজেটেও দেখেছি যে, বাজেটের ১৫% এর মতো অর্থ সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় হচ্ছে। এটা শোভনীয় না। এটাকে যুক্তিসংগত করতে হবে।
৬. থোক বরাদ্দ কমাতে হবে।
৭. এডিপি বাস্তবায়নের হার খুবই কম। আমলাদের অদক্ষতার কারণেই এটা হয়। এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার।
৮. প্রতিরক্ষা ব্যয় কমাতে হবে। দেশের উল্লেখযোগ্য অংশের নাগরিককে মৌলিক প্রয়োজন পূরণের ব্যবস্থা না করে প্রতিরক্ষায় অস্বাভাবিক ব্যয় অগ্রহণযোগ্য। প্রতিরক্ষা ব্যয় কমিয়ে জনস্বার্থ ও সামাজিক সুরক্ষা নির্ভর বাজেট দিতে হবে। সামরিক বাহিনীর ব্যয়ে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও যৌক্তিকতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলোকে একটি উৎপাদনশীল বাহিনীতে পরিণত করে গড়ে তুলতে হবে।
এমডব্লিউ/