ফরহাদ খান নাঈম
শরীয়তের পরিভাষায় এঙ্গেজমেন্ট বলতে পুরুষ কর্তৃক কোনো নারীকে বিবাহ করতে চাওয়া বোঝায়। বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার উদ্দেশ্যে এধরনের এঙ্গেজমেন্ট অত্যন্ত জরুরি।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর যদি তোমরা আকার-ইঙ্গিতে নারীদের বিয়ের প্রস্তাব দাও, তবে তোমাদের কোন পাপ নেই। সূরা বাকারা: ২৩৫।
তাছাড়া হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সা. এর সাথে আয়েশা রা. এর বাগদান হয়েছিলো। বুখারি: ৪৭৯৩। অপর হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সা. এর সাথে হাফসা রা. এর বাগদান হয়েছিলো। বুখারি: ৪৮৩০।
বিবাহের নিয়তে প্রস্তাব দিয়ে পাত্রের জন্য পাত্রীকে দেখার অনুমতি রয়েছে। এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন কোন নারীকে বিবাহের প্রস্তাব দিবে তখন সম্ভব হলে তার এমন কিছু যেন দেখে নেয় যা তাকে বিবাহে উৎসাহিত করে। আবু দাউদ: ২০৮২।
তবে ইসলামে কোনো নারীকে বিবাহের প্রস্তাব দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো প্রথা কিংবা রীতিনীতি নেই। এঙ্গেজমেন্টের নামে আমাদের সমাজে প্রচলিত আংটি বদলের যেই রেওয়াজ আছে তা সম্পূর্ণ শরীয়তবিরোধী। মূলত এঙ্গেজমেন্টের সাথে আংটি বদলের কোনো সম্পর্ক নেই।
অনেকে মনে করেন, বিবাহের পূর্বে পাত্র-পাত্রীর মাঝে আংটি বদল করলে উভয়ের মধ্যে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। এটি একটি সামাজিক কুসংস্কার ও অজ্ঞতা বৈ কিছুই নয়। ইসলামী শরীয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই।
বিবাহপূর্ব পাত্র কর্তৃক পাত্রীকে আংটি পরিয়ে দেওয়ার এই প্রথাটি মূলত ইহুদি-খৃষ্টানদের থেকে এসেছে। এই প্রথার সাথে মুসলমানদের কোনো সম্পর্ক নেই। আর নবীজি সা. বলেছেন, যে কোনো জাতিকে অনুসরণ করবে, আখিরাতে সে ওই জাতির অন্তর্ভুক্ত হবে। আবু দাউদ: ৪০৩১।
সমাজে প্রচলিত এঙ্গেজমেন্ট তথা পাত্র কর্তৃক পাত্রীকে আংটি পরানোর অনুষ্ঠানে সাধারণত ছেলে মেয়েটিকে নিজ হাতে আংটি পরিয়ে দেয়; অথচ মেয়েটি এখনো তার স্ত্রী হয়নি। বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত মেয়েটি ছেলেটির জন্য গাইরে মাহরাম, অর্থাৎ উভয়ের মধ্যে পর্দার বিধান শতভাগ বর্তাবে। আর আংটি পরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ছেলে-মেয়ে উভয়েই পর্দার বিধান লঙ্ঘন করে কবিরা গুনাহে লিপ্ত হচ্ছে।
সুতরাং সমাজে প্রচলিত বিবাহপূর্ব আংটি বদল কিংবা পাত্র কর্তৃক পাত্রীকে আংটি পরিয়ে দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে একটি হারাম ও নাজায়েজ কাজ।
-এটি