আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: জাপানের সুরুগা সাগরের মাত্র দুই কিলোমিটার দুরে শিজুওকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান। পৃথিবীর বিখ্যাত জলন্ত আগ্নেয়গিরি হিসেবে পরিচিত মাউন্ট ফুজি বা ফুজি পর্বতমালাও এই শিজুওকাতেই মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে রয়েছে, যার নয়নাভিরাম দৃশ্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মন জুরিয়ে দেয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের ন্যায় প্রতিবছর অনেক বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরাই এখানে ভর্তি হন। দুই ক্যাম্পাস মিলে বর্তমানে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রায় পঞ্চাশ এর কাছাকাছি।
তাবলীগ জামাতের সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বাংলাদেশী মুসলিম শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র দুইশ মিটারের মধ্যেই পরিচালিত হচ্ছে একটি মসজিদ। রমজানের আগে করোনার প্রভাব কম থাকায় পুরা রমজান জুড়েই মসজিদে ইফতারের আয়োজন, তারাবিহ নামাজ, শেষ দশকে কিয়ামুল লাইল, সেহরি, নফল এতেকাফ সহ অনেক ধরণের ইসলামিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। অবশ্য বর্তমানে এটি ছারাও শিজুওকাতে ক্যাম্পাস থেকে বিশ কিলোমিটার দূরে আরেকটি বড় আকারের মসজিদ রয়েছে।
ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষদের উপর রমজানের শেষ দশক থেকে শুরু হওয়া ইসরাইল সেনা কর্তৃক জুলুম নির্যাতনের প্রতিবাদে যখন সারা পৃথিবীর শান্তিকামী জনগণ প্রতিবাদ ও তাদের জন্য সহমর্মিতা দেখিয়েছে, জাপানে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের নাগরিকরাও সেই সহমর্মিতায় এগিয়ে এসেছে। জাপানের বিভিন্ন স্থানেই প্রতিবাদ সভা, মানব বন্ধন, ইসরাইল দূতাবাস ঘিরে র্যালি সহ বিভিন্ন কার্যক্রম হয়েছে। শিজুওকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষদের জন্য বিভিন্ন ভাবেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অনেকেই স্কলারশিপ থেকে, কেউবা পার্ট-টাইম জবের আয় থেকে ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে সাহায্য করেছেন। যার মাধ্যমে একটি বড় অঙ্কের অর্থ ফিলিস্তিনের দূতাবাসে পৌঁছানো হয়েছে। এই বিষয়ে সার্বিক পরামর্শ বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদে হলেও প্রথম উদ্যোগটি নিয়েছিলেন পোষ্ট-ডক্টরাল রিসার্চার ডক্টর ফারজানা হোসাইন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রী। চলমান ইস্যু নিয়ে তিনিই মসজিদের ইমাম এবং পি,এইচ,ডি শেষ বর্ষে অধ্যায়নরত মোঃ হযরত আলী কে মসজিদে উপস্থিত সবাইকে এই বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান এবং বিষয়টি নিয়ে সামাজিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণের পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়ায় ড. ফারজানা বলেন-ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ত এবং আমাদের অবস্থান থেকে নেক নিয়তে তাদের জন্য কিছু করা উচিত।
এর পাশাপাশি ফিলিস্তিনের ভাইবোনদের জন্য মসজিদে জুম্মা নামাজের পরে বিশেষ দুয়া অনুষ্ঠিত হয়। শিজুওকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংগালি শিক্ষার্থীদের এই মহৎ উদ্যোগ এর কথা জানতে পেরে টোকিওতে অবস্থানরত বাংলাদেশী অনেকেই আর্থিকভাবে তাদের সাথে অংশগ্রহণ করেছেন।
-এটি