আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ এড়াতে ২০২১ সালে বিশ্বের সব দেশ থেকে ৬০ হাজার মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দেবে সৌদি আরব। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে হারামাইন ডটইনফো।
সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে সংবাদমাধ্যম সিয়াসাত ডট কম জানিয়েছে, দেশের বাইরে থেকে ৪৫ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে হজ পালনের সুযোগ দেওয়া হবে। আর সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ ১৫ হাজার জনকে হজের অনুমতি দেওয়া হবে।
সৌদি আরবের বাইরের মুসলিমদের জন্য আগামী জুলাই মাসে হজ কার্যক্রমে অংশগ্রণের সুযোগ দেবে দেশটি। তবে করোনার প্রাক-প্রাথমিক সময়ের তুলনায় এবার আরও কম হবে।
তবে হজ পালনের যোগ্য হতে বেশ কয়েকটি বিষয় বাধ্যতামূলক করেছে সৌদি সরকার।
সেগুলো হচ্ছে -
১. হজ পালনকারীদের বয়স ১৮-৬০ এর মধ্যে হতে হবে।
২. হজ পালনকারীকে অবশ্যই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে।
৩. হজ পালনকারীদের এ বিষয়টি প্রমাণপত্রসহ নিশ্চিত করতে হবে যে, হজের আগের ৬ মাস কোনো অসুস্থতায় হাসপাতালে ছিলেন না।
৪. হজে যাওয়ার আগে অবশ্যই করোনা ভাইরাসের টিকার দুটি ডোজ সম্পন্ন করার প্রমাণপত্র সংগ্রহের রাখতে হবে।
৫. গ্রহণ করা টিকা সৌদি আরবের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে।
৬. বিদেশিদের হজে আসার সঙ্গে সঙ্গে ৩ দিন কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক।
৭. টিকার প্রথম ডোজ অবশ্য ঈদুল ফিতরের আগে নিতে হবে এবং দ্বিতীয় ডোজ সৌদিতে পৌঁছার ১৪ দিন আগে নিতে হবে।
৮. পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি সর্বাত্মকভাবে অনুসরণ করতে হবে।
হারামাইন শরিফাইনের টুইটারে হাজিদের পালনীয় এসব নির্দেশনাবলি উল্লেখ করা হয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাজিদের উদ্দেশে আরো গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছে। হজের স্থানে পৌঁছার আগে, হোটেলে পৌঁছার পর, আরাফার ময়দান ও মসজিদুল হারাম অবস্থানকালে এসব নিয়ম মেনে চলতে হবে হাজিদের।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে গত বছর সীমিত আকারে হজ পালন হয়। সেবার হজ পালনে সুযোগ পেয়েছিলেন কেবল সৌদি আরবে বসবাসকারীরা। সৌদি আরব ছাড়া আর কোনো দেশে বাসিন্দাদের হজে যাওয়ার অনুমতি মেলেনি।
করোনার কারণে এ বছরও হজ পালনে বিশেষ কিছু নিয়মে সীমাবদ্ধ থাকবে - এমনটা জানিয়ে এসেছে সৌদি সরকার।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এড়াতে এ বছর ‘বিশেষ শর্ত’ অনুযায়ী হজ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে চলতি মে মাসের শুরুতে জানায় সৌদি সরকার।
গত ১০ মে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এ বছর কী পদ্ধতিতে এবং কোন কোন শর্ত মেনে হজ পালন করা যাবে সে বিষয়ে পরে জানিয়ে দেওয়া হবে। সৌদি আরবের স্বাস্থ্য ইনিস্টিটিউট পরিস্থিতি মূল্যায়ণ অব্যাহত রাখবে এবং সব মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেবে।’
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার আগে প্রতিবছর সারা বিশ্ব থেকে ২৫ লাখের বেশি মানুষ হজ পালন করতে সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনায় যেতেন।
এছাড়া, সারা বছরই ওমরাহ পালন করতে গোটা বিশ্ব থেকে হাজার হাজার মুসলমান সৌদি আরবে যান। হজ থেকে সৌদি আরব প্রতিবছর প্রায় ১ হাজার ২শ’ কোটি মার্কিন ডলার আয় করে।
এনটি