আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বাঁশজানি সীমান্তের শূন্য রেখায় প্রাচীন মসজিদের সংস্কার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
স্থানীয়রা জানান, মসজিদটি বাংলাদেশ ও ভারত সীমানার আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ৯৭৮ এর সাব- পিলার ৯ এসএর পাশে অবস্থিত। এই মসজিদে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের মুসল্লিরা প্রায় ২০০ বছর ধরে নামাজ আদায় করে আসছেন। এর উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার সাহেবগঞ্জ থানার ঝাকুয়াটারী গ্রাম। দক্ষিণে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের বাঁশজানি গ্রাম। দুই সীমান্তের শূন্য রেখায় বাংলাদেশের ভূখণ্ডে নির্মিত মসজিদের নাম ‘ঝাকুয়াটারী সীমান্ত জামে মসজিদ’।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি মসজিদ কমিটি প্রাচীন এই মসজিদটির সংস্কারকাজ শুরু করলে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কাজে বাধা দেয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় দুই বাংলার মানুষের এক মসজিদের নির্মাণকাজ।
কুড়িগ্রাম-২২ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, ১৮২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ভারত-বাংলাদেশ দুই বাংলার দক্ষিণ বাঁশজানি-ঝাকুয়াটারী জামে মসজিদ। দেশভাগ হলে মসজিদটি বাংলাদেশ অংশে, সীমান্তের শূন্য রেখায় পড়ে। কিন্তু সীমানার বিভাজন দুই দেশের মুসল্লিদের বিভক্ত করতে পারেনি। তারা একসঙ্গে নামাজ আদায় করে থাকেন। এখানে ভারতীয় অংশটি কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে থাকায় অবাধ যাতায়াত রয়েছে। দুই দেশের মুসল্লিদের সেতু বন্ধন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি।
দু শ বছরের পুরোনো মসজিদটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ হওয়ায়, মসজিদ কমিটি ও দুই দেশের মানুষ চাঁদা দিয়ে একটি পাকা মসজিদ ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ৩৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৪ ফুট প্রস্থের মসজিদটির নতুন ভবনের বেশ কিছু কাজও এগিয়ে যায়। সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডের ১৫০ গজের ভেতরে পাকা স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে বিধিনিষেধ ও নিয়মের কথা বলে মসজিদ নির্মাণে বাধা দেয় বিএসএফ।
মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি কফিলুর রহমান বলেন, দুই দেশের মুসল্লিদের দাবি আইনি জটিলতা কাটিয়ে ঐতিহাসিক এই মসজিদটির একটি স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করে ২শ বছরের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার জন্য অনুমতি দেয়া হোক।
কুড়িগ্রাম-২২ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জামাল হোসেন বলেন, ওই স্থানটিতে ঐতিহ্যবাহী পুরোনো একটি মসজিদ রয়েছে। দীর্ঘ দিন থেকে দুই দেশের মুসলমানরা একত্রিত হয়ে নামাজ আদায় করে আসছে। মসজিদটির ভবন নির্মাণে বিএসএফ আপত্তি জানিয়েছে। আমরা খুব দ্রুত এর প্রতি উত্তর পাঠাব, ঐতিহাসিক এই পুরোনো মসজিদটি নির্মাণে যেন তারা বাধা না দেয়।
এনটি