আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় সাম্প্রতিক আগ্রাসনে ইসরায়েলের নিক্ষিপ্ত অবিস্ফোরিত তিন শ' শেল ও মিসাইল নিষ্ক্রিয় করেছে গাজার পুলিশ। গাজার পুলিশ প্রধান মাহমুদ সালাহ এক সংবাদ সম্মেলনে শনিবার এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বোম্ব ডিসপোজাল টিমের সদস্যরা তাদের সীমিত ক্ষমতা সত্ত্বেও এখনো গাজায় ছড়িয়ে থাকা অবিস্ফোরিত শেল ও মিসাইল নিষ্ক্রিয় করার কাজ করে যাচ্ছে।
ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজার পুলিশ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদ সালাহ বলেন, 'পুলিশ সদর দফতরে বোমা হামলা করে ইসরায়েলি দখলদাররা আমাদের ঘর সম্পর্কে উদ্বিগ্ন করতে চেয়েছিল, কিন্তু পুলিশ দখলদারদের মোকাবেলায় ইতস্তত করেনি।'
তিনি বলেন, 'আমাদের নিরাপত্তা অস্থিতিশীল করতে এবং অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনাকে হুমকির মুখে ফেলতে দখলদাররা শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা দৃঢ়ভাবে তাদের অবস্থানে থেকে আমাদের জনগণকে কার্যকর সহায়তা দিয়েছেন।'
অধিকৃত জেরুসালেমের শেখ জাররাহ মহল্লা থেকে ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে ইহুদি বসতি স্থাপনে গত ২৫ এপ্রিল আদেশ দেয় ইসরায়েলি এক আদালত। এই জেরে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে পরপর কয়েক দফা মসজিদুল আকসায় হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। ৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত এই সকল হামলায় এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন বলে জাতিসঙ্ঘের মানবিক সাহায্য বিষয়ক দফতর ইউএনওসিএইএ।
মসজিদুল আকসা চত্ত্বরে মুসল্লিদের ওপর ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ মে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে মসজিদ থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে ইসরায়েলকে আলটিমেটাম দেয় গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর গাজা থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামাস রকেট হামলা শুরু করে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজা থেকে ইসরাইলি ভূখণ্ডে মোট চার হাজার তিন শ' ৬০টি রকেট নিক্ষেপ করেছে হামাস। ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোমে বেশিরভাগ রকেট ধ্বংস করা হলেও বেশ কিছু রকেট ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হানে। রকেট হামলায় ইসরাইলের ১২ অধিবাসী নিহত ও সাত শ’ ৯৬ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
ইসরায়েল ভূখণ্ডে হামাসের রকেট হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ মে রাত থেকেই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৬৬ শিশু ও ৩৯ নারীসহ ২৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত হন। হামলায় আহত হয়েছেন আরো এক হাজার নয় শ' ৪৮ গাজাবাসী।
গাজায় ইসরাইলের টানা ১১ দিনের আগ্রাসনের পর বৃহস্পতিবার রাতে ইসরাইল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার ঘোষণা দেয়। মিসরীয় উদ্যোগে এই যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টায় ইসরাইলি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর শুক্রবার সকাল থেকে তা কার্যকর হয়।
সূত্র : ইয়েনি শাফাক
এনটি