সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

মাছ চাষের মাধ্যমে যুবসমাজকে স্বাবলম্বী হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে সরকারি সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে ঘরের পাশের পরিত্যক্ত জলাশয়ে মৎস্য চাষের মাধ্যমে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলতে দেশের যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া শিখবে। শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরাই যদি মৎস্য খামার করে মাছ উৎপাদন করে এবং বাইরে বিক্রি করে তাহলে সে পয়সা পেতে পারে। আর যুব সমাজের জন্য আমরা কর্মসংস্থান ব্যাংক করে দিয়েছি। সেখানে থেকে কোনো জমানত ছাড়াও ঋণ নেওয়া যেতে পারে। সেই ঋণ নিয়ে যে কেউ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে, কাজ করতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সারা দেশে আমরা একশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি এবং সেখানে আমরা খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তোলার ওপর সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। সেখানে যাতে মৎস্যজাতীয় পণ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং বাজারজাত করা যায় সেই সুযোগও সৃষ্টি হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের ১৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের নিজেদেরও সংগঠনকে আরও সুসংগঠিত করা এবং আমাদের যুব সমাজ যাতে আরও এগিয়ে আসে ও মৎস্য উৎপাদনে মনোযোগী হয় সেদিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। কেননা এখানে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

তিনি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মৎস্যজীবী লীগের প্রতিটি সদস্যকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তখনই কাজ করেছে।

আমাদের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে বলে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ৯৬ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি ৯৮ সালেই বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে ফেলি। দ্বিতীয়বার যখন ক্ষমতায় আসি তখনো আমাদের লক্ষ্য পূরণ করি এবং খাদ্য নিরাপত্তার সাথে সাথে পুষ্টি যাতে যোগ হয় তার ব্যবস্থা নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে জন্য আমাদের যুবসমাজকে ট্রেনিং দেয়া, সুযোগ সৃষ্টি করা, জলাধারগুলো সংস্কার করে মাছ উৎপাদন যাতে বৃদ্ধি পায় তার ব্যবস্থা করা, এর ওপর গবেষণার ব্যবস্থা করা, গবেষণা করে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা, কৃত্রিম প্রজননের ব্যবস্থা করা এবং খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে নিরাপদ পুষ্টি মাছ যাতে থাকে তার ব্যবস্থা করি।

তিনি বলেন, একটা মানুষ যদি ৬০ গ্রাম মাছ খেতে পারে তা যথেষ্ট সেখানে একজনের খাদ্যতালিকায় আমরা ৬২ গ্রাম মাছ তুলে দিচ্ছি, সেই সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। আর সেই সাথে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ নদী-নালা,খাল-বিলের দেশ। এ দেশে শত শত নদী রয়েছে। আমাদের খাল-বিল ও জলাধারগুলো সংস্কার করে যাচ্ছি এবং সেখানে আরও বেশি পরিমাণ মাছ যাতে উৎপাদন হয় তার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। তিনি বলেন, আমাদের মাছের উৎপাদন যেখানে ২৭ লাখ মেট্রিক টন ছিল সেখানে আমরা ৫০ লাখ মেট্রিক টনের কাছাকাছি উৎপাদন শুরু করেছি। আর সেই সাথে সাথে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় যাতে মাছ থাকে তারও ব্যবস্থা নিয়েছি। আর ইলিশ উৎপাদনে আমরা এখন পৃথিবীর এক নম্বর অবস্থানে চলে এসেছি।

ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রজননের সময়ে আমরা মৎস্যজীবীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে থাকি, তাঁদের খাদ্য সাহায্য দিই।

তিনি বলেন, প্রত্যেককে প্রতি মাসে বিনা পয়সায় খাদ্য দিয়ে থাকি, চাল দিয়ে থাকি, আবার সেই সঙ্গে আবার ঝাঁকায় করে মাছের চাষের উদ্যোগের মাধ্যমে বিকল্প কর্মসংস্থানের উদ্যোগও নিয়ে থাকি যাতে আমাদের মৎস্যজীবীরা কোনোরকম কষ্ট না পান । সেদিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এভাবে মাছ উৎপাদনে আমরা বিশেষ যতœ নিচ্ছি। এ কারণে আমরা খাদ্য নিরাপত্তার পর এখন পুষ্টি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়ায় মানুষ আর পুষ্টিহীনতায় ভুগছে না।

তিনি বলেন, সেই সাথে আমি একটি অনুরোধ করব খাদ্যতালিকায় শুধু বেশি করে ভাত খাওয়া নয় সেই সঙ্গে বেশি করে মাছ, শাক-সবজি এবং ফলমূল খাওয়াসহ পুষ্টিগুণ যেন থাকে সে ব্যবস্থা করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চাই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি এটুকু বলব যে আদর্শ এবং নীতি নিয়ে তিনি এ দেশ স্বাধীন করেছিলেন সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ করব এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।

তিনি পুনরায় সকলকে কোভিড-১৯ সম্পর্কে সতর্ক করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন যাতে করোনাভাইরাস কারও ক্ষতি করতে না পারে। সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। নিজেকে এবং অপরকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।

সূত্র: বাসস।

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ