আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনির গাজায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় এ পর্যন্ত ৫২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের একটি ত্রাণ সংস্থা।
জেনেভায় জাতিসংঘের ‘অফিস ফর দ্য কো–অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্স’ (ওসিএইচএ)-এর মুখপাত্র লেয়ার্কে মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, গাজায় জাতিসংঘ-পরিচালিত ৫৮ টি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি।
তিনি আরও জানান, ইসরায়েলের বিমান হামলায় ১৩২টি ভবন ধ্বংস হয়েছে এবং ৩১৬টি ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬টি হাসপাতাল ও ৯টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে।
এ ছাড়া, সুপেয় পানির সঙ্কটে পড়েছে প্রায় আড়াই লাখ গাজাবাসী। জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক ত্রাণ সংস্থা থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষদেরকে খাবার ও অন্যান্য সাহায্য দেওয়া হচ্ছে বলে জানান লেয়ার্কে।
সেখানকার পরিস্থিতির বর্ণনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস বলেন, গাজায় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহে মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বাস্ত্যুচুত ফিলিস্তিনিরা স্কুলগুলোতে গাদাগাদি করে থাকার কারণে কোভিড সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া এবং পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবল ঝুঁকিতে আছে।
এদিকে, ইসরায়েলের বিমান হামলা নিয়ে আলাদা এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ফিলিস্তিনের আবাসিক এলাকাগুলোতে ইসরায়েলের বিমান হামলা যুদ্ধাপরাধের সামিল। যদিও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলে আসছে, তারা কেবল সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করেই হামলা চালাচ্ছে, যাতে বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনা এড়ানো যায়।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজার সঙ্গে ইসরায়েলের লড়াই এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হিসাবমতে, ১০ মে ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে ৬৩ শিশুসহ ২১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গত সপ্তাহে লড়াইয়ে দুইপক্ষকে মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন না করার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু গাজার আবাসিক এলাকায় আগাম কোনও সতর্কবার্তা না দিয়েই ইসরায়েল যেভাবে হামলা চালিয়েছে তার তদন্ত দাবি করেছে অ্যামনেস্টি।
সংগঠনটি জানায়, গাজায় ইসরায়েলের এমন ৪ টি প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা তারা নথিভুক্ত করেছে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে তা তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানাচ্ছে।
অ্যামনেস্টি বলছে, গাজায় গত ১১ মে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ২ টি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে ৩০ জন নিহত হয়েছে। তাদের ১১ জনই ছিল শিশু। ১৪ মে তে আরেকটি তিন তলা ভবনে বিমান হামলায় এক মা ও শিশু নিহত হয়। ১৫ মে তেও বিনা সতর্কবার্তায় আরেকটি বাড়িতে হামলা চালায় ইসরায়েল।
তবে ইসরায়েল এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য করেনি।
সূত্র: রয়টার্স।
এনটি