সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


‘গাজায় হামলার পেছনে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো দেশগুলো দায়ী’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন ও সহিংসতার মধ্যেই গত দেড় থেকে দুই বছর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা দেশগুলোর কঠোর সমালোচনা করেছেন ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল মালিকি। একইসঙ্গে অবৈধ দখলদারিত্বের মধ্যেই যেসব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে, তারাও আজকের পরিস্থিতির জন্য অবশ্যই দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। খবর আল জাজিরার।

রোববার (১৬ মে) অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের (ওআইসি) ৫৭ সদস্যের এক জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে বক্তৃতাকালে এ সমালোচনা করেন ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

রিয়াদ আল মালিকি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করা ইসরায়েল শান্তি ও সহিংসতার সমাপ্তি কখনই চায় না। তারা স্পষ্টত বর্ণবাদী এবং সহিংসতা চালিয়ে ভূমি দখলে বিশ্বাসী গোষ্ঠী। ইসরায়েল কখনও তাদের অবৈধ দখলের প্রক্রিয়া থামিয়ে দেয়নি। অথচ সবকিছু স্বাভাবিক করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলে আরবের অনেক দেশও তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। যা ইসরায়েলকে আরও আগ্রাসী এবং সন্ত্রাসী করে তুলেছে। যারা ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক করছে, তারা ইসরায়েলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করছে বলে প্রতীয়মান হয়।’

তিনি বলেন, আল্লাহর কাছে আমাদের বলা প্রয়োজন, শেষদিন পর্যন্ত আমরা প্রতিরোধ করব। ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদী দখলদারিত্বের মধ্যেও আমরা এগিয়ে চলছি। তবে অবশ্যই ইসরায়েলের এই দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে হবে।’

রিয়াদ আল মালিকি বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ তাদের জাগরণ স্পষ্ট করেছে। তারা জানিয়ে দিয়েছে জেরুসালেম ইহুদিদের চূড়ান্ত সীমারেখা। তারা ইসরায়েলকে এই সীমারেখা অতিক্রম করতে দেবে না। ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের ঘাতক যন্ত্রের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।’

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই বছরের মধ্যে সুদান, মরক্কো, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়িয়েছে। তারা ইসরায়েলের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তিও করেছে। তবে গাজায় ইসরায়েলি নৃশংস হামলার পর থেকে মুসলিম দেশগুলো বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে।

এদিকে, ফিলিস্তিনে চলমান অস্থিরতা ও গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহত থাকায় ওআইসি সভাপতি সৌদি আরবের অনুরোধে রোববার (১৬ মে) জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠক আহ্বান করা হয়। বৈঠক শেষে মুসলিম দেশগুলোর নেতারা যুক্ত বিবৃতি দেন।

বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতিতে ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করে বলা হয়, পুরো অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে কৌশলগত অপরাধের মাধ্যমে পরিস্থিতির অবনতির জন্য দখলদার শক্তি ইসরায়েল সম্পূর্ণভাবে দায়ী।

বিবৃতিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে সঙ্কট সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধের উদ্যোগের আহ্বান জানানো হয়।

গত এক সপ্তাহ ধরে ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর অব্যাহত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। রোববার (১৬ মে) ইসরায়েলি হামলায় একদিনে ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত মোট ১৯২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫৫ জন শিশু এবং ৩৩ নারী। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন সহস্রাধিক ফিলিস্তিনি।

এর আগে শনিবার বোমা হামলা চালিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) কার্যালয় ভবন গুঁড়িয়ে দেয় ইসরায়েলি বাহিনী।

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ