আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বেসরকারি হিসাবে ঢাকার বস্তিগুলোতে ৪০ লাখ নিম্ন আয়ের মানুষের বাস। এর বাইরে আরও ৫০ হাজার মানুষ আছেন যারা ভাসমান হিসেবে ঢাকার বিভিন্ন উদ্যান, পার্ক ও ফুটপাতে বাস করেন। ঈদুল ফিতরে প্রতি বছর এসব মানুষের জীবন সাদামাটাভাবে কাটে। এ বছরের ঈদ ছিল আরও সাদামাটা।
মহামারী করোনা জীবিকায় বড় টান ফেলছে তবে সে তুলনায় সরকারি-বেসরকারি সহায়তা আসেনি। এ অবস্থায় ঢাকার দরিদ্ররা বলেছে, ঈদের আনন্দ তারা টেরই পাননি। সাধারণ দিনগুলোর মতোই টানাপড়েনে কেটেছে বিশেষ এই দিনটি।
কামরাঙ্গীরচরের মাঝিঘাট এলাকায় গতকাল রবিবার কথা হয় রুমিয়া বেগমের সঙ্গে। চার সন্তান তার। স্বামী নেই। সবার ছোট ছেলেটাকে একটি পাঞ্জাবি কিনে দিয়েছিলেন। অন্যদের দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে মায়ের ওপর মন খারাপ করে আছে অন্যরা।
রুমিয়া বেগম বলেন, ‘মানুষের বাসায় কাম কইর্যা মাস শ্যাষে পাই ৬ হাজার ট্যাকা। ঘর ভাড়াতেই চইল্যা যায় ৩ হাজার। বাকি ট্যাকা দিয়া সংসার চলে না। বাচ্চারা তো এইট্যা বোঝে না। বাচ্চাগোর জন্য মনটা কান্দে কিন্তু কিচ্ছু দিতে পারি না। ওদের মুখে হাসি নাই, মা হইয়া আমার ঈদ হয় ক্যামনে?’
প্রতি বছরেই ঈদের আনন্দ কমবেশি ভাগাভাগি করে নিতে পারলেও এ বছর ঈদের আনন্দ অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে রাজধানীর বস্তিবাসীর। সরকারি বা বেসরকারিভাবে তেমন কোনো ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ায় ঈদের আনন্দ নেই ঢাকার অধিকাংশ বস্তিবাসীর। গত বছর করোনার মধ্যে ঈদে তাদের অনেকে ত্রাণ ও বিভিন্ন সহযোগিতা পেয়েছে। তবে এবারের ঈদে বেশিরভাগই কোনো প্রকার ত্রাণ বা সহযোগিতা পায়নি।
নিম্ন আয়ের মানুষরা জানিয়েছেন, গত বছর সাধারণ ছুটির মধ্যে ঈদ উদযাপন হয়। সেবার সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছিল। কিন্তু এবার মোটের ওপর ছিল ব্যতিক্রম। দেড় মাস ধরে লকডাউন চললেও কেউ সহায়তা পাননি। এমনকি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৩৫ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে ঈদ উপহারের টাকাও তারা পাননি।
এনটি