শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

প্রচলিত মেলা সমাজ ধ্বংস করছে না তো?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আর. এম. আল আমীন

মেলা। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন উপলক্ষে মেলা বা সাময়িক বাজারের আয়োজন করা হয়। যেমন - বই মেলা, ফাল্গুনী মেলা, বৈশাখী মেলা ইত্যাদি। সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় বা শখের সামগ্রীর পসরা মেলে দোকানীরা বসে। আর তথায় ছেলে-মেয়ে, জোয়ান-বুড়ো সবাই গিয়ে জড়ো হয় বিনোদনমূলক কেনা-কাটা, খাওয়া-দাওয়া করা ও ঘুরাফেরা করার জন্য।

এখন কথা হলো মেলা জায়েজ নাকি না জায়েজ। এর উত্তর সহজে এভাবে দেয়া যায় যে, যদি এসমস্ত মেলায় ইসলাম পরিপন্থী কোন কার্যক্রম না হয় তাহলে তা জায়েজ। যেমন বই মেলা। কিন্তু এই বই মেলাতেও যদি ইসলাম পরিপন্থী কার্যক্রম হয় তাহলে তাও হারাম। যেমন পর্দা ছাড়া অবাধে ছেলে-মেয়েদের চলাফেরা, গানবাজনা করা ইত্যাদি।

বর্তমান সময়ে চলমান মেলা গুলো বিধর্মীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মতোই অনুষ্ঠিত হয়। কারণ এখানে গান-বাজনা, নারী-পুরুষের অবাধে চলাফেরা এমন কি শরীয়ত পরিপন্থী বিভিন্ন জিনিসেরও আয়োজন করা হয়। যেমন জুয়ার আসর, লটারি ও জাদুর মতো জঘন্যতম জিনিস।

গান-বাজনা, মদ, জুয়া, লটারি ও পর্দার বিধান।

১. গান-বাজনা সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ইরশাদ করেন;- আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা খরিদ করে, আর তারা সেগুলোকে হাসি-ঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে; তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আজাব। (সূরা: লুকমান, আয়াত নং: ০৬-০৭)

কোরআন মাজীদের অন্য আয়াতে আছে, ইবলিস-শয়তান আদম সন্তানদের ধোঁকা দেওয়ার আরজী পেশ করলে আল্লাহ তায়ালা ইবলিসকে বললেন, “তোর আওয়াজ দ্বারা তাদের মধ্য থেকে যাকে পারিস পদস্খলিত কর।” (সূরা: আল-ইসরা, আয়াত নম্বর: ৬৪)

গান-বাজনা সম্পর্কে হাদিস- রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, তোমরা গায়িকা ক্রয়-বিক্রয় কর না এবং তাদেরকে গান শিক্ষা দিয়ো না। আর এসবের ব্যবসায় কোনো কল্যাণ নেই। জেনে রেখো, এর প্রাপ্ত মূল্য হারাম। (জামে তিরমিযী হাদিস: ১২৮২; ইবনে মাজাহ হাদীস: ২১৬৮)

নাসাঈ ও সুনানে আবু দাউদে বর্ণনা করা হয়েছে যে, একদিন হজরত আয়েশা রা. এর নিকট বাজনাদার নূপুর পরে কোনো বালিকা আসলে আয়েশা রা. বললেন, খবরদার, তা কেটে না ফেলা পর্যন্ত আমার ঘরে প্রবেশ করবে না। অতঃপর তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন যে, "যে ঘরে ঘণ্টি থাকে সেই ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ননম্বর: ৪২৩১, সুনানে নাসাঈ, হাদীস নম্বর: ৫২৩৭)

সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, ঘণ্টি বাজা, ঘুঙুর হলো শয়তানের বাদ্যযন্ত্র।" (সহীহ মুসলিম, হাদীস নম্বর: ২১১৪)

২— আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনুল কারিমে মদ, জুয়া, বলি ও ভাগ্য গণনা সম্পর্কে বলেন,‘হে ঈমানদারগণ! মদ, জুয়া, দেবতার নামে বলি দেয়া ও লটারি দ্বারা ভাগ্য গণনা শয়তানের অপবিত্র কাজ। অতএব এসব কাজ থেকে দূরে থাকো যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। মদ ও জুয়ার মধ্য দিয়ে শয়তান তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে চায় এবং আল্লাহর স্বরণ ও নামাজ থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে চায়। তোমরা কী বিরত থাকবে? (সূরা আল মায়েদাহ ৫/৯০-৯১)।

৩— পর্দার বিধান সম্পর্কে আয়াত;- তারা যেন নিজেদের আভরণ প্রকাশ না করে তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যারা যৌন কামনা-রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত অন্য কারো নিকট। (সূরা নূর (২৪) : ৩১)

(হে নবী!) মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে ও তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। তারা যেন সাধারণত যা প্রকাশ থাকে তা ছাড়া নিজেদের আভরণ প্রদর্শন না করে। (সূরা নূর : ৩১)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত আছে যে, ‘সাধারণত যা প্রকাশিত’ অর্থ হচ্ছে কাপড়।-তাফসীরে তাবারী ১৮/১১৯

শেষ কথা, উপরোল্লিখিত আয়াত ও হাদিস দ্বারা প্রমানিত হলো যে গান-বাজনা, মদ,জুয়া,লটারি ও পর্দাহীন নারীদের অবাধে চলাফেরা করা হারাম। আর এ সমস্ত কার্যক্রম বর্তমান সময়ের মেলা গুলোতে সম্পাদিত হচ্ছে অহরহ। তাই তা হারাম হওয়া ছাড়া হালাল হওয়ার কোন পন্থা আমার জানা নেই। এসব মেলায় যোগদান ও যোগানদান সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। ওসব মেলার কোনো জিনিস খাওয়াও ইসলামী আত্মমর্যাদাবোধের পরিপন্থী।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ