মোস্তফা ওয়াদুদ: জাতীয় দলের আলোচিত ক্রিকেটার নাসির হোসেন গত রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিয়ে করেছেন। রাজধানীর উত্তরার একটি রেস্টুরেন্টে বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। নাসিরের স্ত্রীর নাম তামিমা তাম্মি। তিনি পেশায় একজন কেবিন ক্রু। কাজ করেন বিদেশি একটি এয়ারলাইন্সে। তবে বিয়ের খবর ছাপিয়ে নাসিরের স্ত্রীকে জড়িয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু পোস্ট এবং ছবি প্রকাশ করা হয়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে, এগারো বছর আগে অন্য জায়গায় বিয়ে হয় তামিমার। সেই ঘরে আট বছরের একটি মেয়ে সন্তানও রয়েছে। কিন্তু স্বামীকে তালাক না দিয়েই ক্রিকেটার নাসিরকে বিয়ে করেছেন তামিমা! এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছেন তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান। তিনি বলেন, স্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক। আমার ৮ বছরের একটি মেয়ে আছে। এখনও আমাদের ডিভোর্স হয়নি। কোনো নোটিশ ছাড়া কীভাবে আমার স্ত্রী ৮ বছরের বাচ্চাকে ফেলে অন্য একজনকে বিয়ে করলো সেটাই আমি বুঝতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডি করেছেন তিনি। উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও (ওসি) শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ প্রসঙ্গে কথা বলেছিলাম জামিয়া কোরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ মাদরাসার প্রাক্তন শিক্ষক মুফতি তৈয়ব হোসাইন এর সঙ্গে। তিনি বলেন, ক্রিকেটার নাসিরের বউ এর আগের স্বামীর অভিযোগ যদি সত্য হয়, তাদের মাঝে এখনো যদি শরীয়ত মোতাবেক অথবা মুসলিম পারিবারিক আইন যেটি বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত আইন, এ আইন মোতাবেক তাদের মাঝে যদি ডিভোর্স বা তালাক না হয়ে থাকে তাহলে নাসিরের বিয়ে বৈধ নয়।
আর যেখানে বিয়ে বৈধ নয়; সেখানে তাদের সাথে সাক্ষাৎ, একসাথে থাকা কিংবা অন্য সকল কার্যক্রম হারাম ও নিষিদ্ধ। এবং শরীয়ত মোতাবেক এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি একটি নিন্দনীয় ও অত্যন্ত গর্হিত হারাম কাজ। এর থেকে বিরত থাকা জরুরি।
একই ধরনের কথা বলছেন বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার ও আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, নাসিরের বর্তমান বউ তামিমা আর তামিমার পূর্বের স্বামীর সাথে যদি শরীয়তসম্মতভাবে ছাড়াছাড়ি না হয়ে থাকে, তাহলে কোনভাবেই নাসিরের সাথে তার এই বিয়ে বৈধ নয়। তবে এর জন্য এখানে দুটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে।
প্রথম বিষয় হলো, তামিমের সাথে তার প্রথম স্বামীর ছাড়াছাড়িটা ইসলামী শরীয়ত সম্মতভাবে হয়েছে কিনা। আর ডিভোর্স লেটার পাঠানো এবং সেই ডিভোর্স লেটারটি ইসলামী শরীয়ত সম্মতভাবে বিয়ে বিচ্ছেদ হওয়া পর্যন্ত পৌঁছেছে কিনা, এই বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
আর দ্বিতীয় বিষয় হলো, যদি তার (নাসিরের বউ তামিমার) শরীয়ত সম্মতভাবে ছাড়াছাড়ি বা বিচ্ছেদ হয়ে থাকে, তবুও তাকে তিন মাস পর্যন্ত ইদ্দত পালন করতে হবে।
এই দুটি বিষয়ের কোন একটি বিষয় যদি অনুপস্থিত থাকে, তাহলে নাসিরের বিয়ে শুদ্ধ হবে না। বরং এটি একটি অবৈধ বিয়ে।
এখন তাদের জন্য করণীয় হলো, যদি তারা ঘর সংসার করতে চায়, তাহলে আমরা যে দুটি শর্তের কথা বলেছি-এই দুটি শর্ত মেনে তারপর তাদের বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। অন্যথায় এটি বিয়ে তো হবেই না বরং এটি যিনা-ব্যভিচার হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
এমডব্লিউ/