আওয়ার ইসলাম: মুফতি আজম মুফতি শফি ররহিমাহুল্লাহ পাকিস্তানে প্রথম ইফতা বিভাগ খুলেছিলেন তার নিজ মাদ্রাসায়। তিনি দেওবন্দে থাকা অবস্থায় ৪০হাজার মাসয়ালা লিখেছিলেন। পাকিস্তানে যাওয়ার পরে আরো ৪০হাজার মাসয়ালা লিখেছিলেন। প্রায় ৮০হাজার মাসয়ালার তার হাতে লেখা হয়েছিলো। এত বড় একজন মুফতি সাহেবের মাদ্রাসায় ইফতা কোর্স ছিলো তিন বছরের। বছর শেষে ইফতা বিভাগে যারা অধ্যায়ন করতো, তারা মুফতি হিসেবে সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারতো না। বরং তিনি লিখে দিতেন, তারা আমার মাদ্রাসায় তিন বছর ইফতা পড়েছে।
শায়খুল ইসলাম তাকি উসমানি হাফিজাহুল্লাহ বলেন, অনেকে ফোন করে মাসয়ালা জানার ইচ্ছা করতো। তখন ফোন রিসিভ করে, আমি মাসয়ালা শুনে আব্বা কে বলতাম। আব্বাজান আমাকে বলতো, তোমার বর্ণনা অনুযায়ী আমি ফতুয়া দিবো না। কারণ যে ফতুয়া চায়, তার বলা আর তোমার বর্ণনা এক হতে নাও পারে। সুতরাং, কেউ ফোন করলে আমাকে দিবে।
শায়খুল ইসলাম তকি উসমানি হাফিজাহুল্লাহ বলেন, একদিন এক লোক ফতুয়া জিজ্ঞেস করেছিলো। সে ফতুয়ার উত্তর বাবার মুখে অনেকবার শুনেছি। এজন্য আমি ব্যক্তি কে ফতুয়ার উত্তর দিয়েছি। একথা বাবাকে বলার পরে, তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেন, তোমাকে ফতুয়া দেওয়ার অধিকার কে দিয়েছে? তোমাকে আমি মুফতি হওয়ার সার্টিফিকেট দেইনি। তুমি এমন কাজ কেন করলে? এর পরে আমি দীর্ঘ ৩০ বছর বাবার সাথে অবস্থানকালে কোন ফতুয়া তাকে না দেখিয়ে দেইনি।
শায়খুল ইসলাম তাকি উসমানি হাফিজাহুল্লাহ বলেন, একসময় পাকিস্তানে আবুল ফাতাহ আবু গুদ্দা রহ এসেছিলেন। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, পাকিস্তানের উলামায়ে কেরামগণের ব্যাপারে আপনার মতামত কি? তিনি বললেন ভালো। তবে তিনি হাসি দিয়ে বলেছিলেন এখানে সকলেই মুফতি।
শায়খুল ইসলাম তাকি উসমানি হাফিজাহুল্লাহ বলেন, দাওরা শেষ করে ইফতা পড়লে মুফতি লেখা ঠিক নয়। বরং মুফতি হওয়ার জন্য বিজ্ঞ মুফতিয়ানে কেরামগণের সাথে দীর্ঘ সময় থাকতে হবে। এর পরে যোগ্যতা অর্জন করলে মুফতি হতে পারবে। তিনি বলেন, আব্বাজান কে দেখেছি পাকিস্তানের এক ছাত্রকে ৬মাসে মুফতি হওয়ার সার্টিফিকেট দিয়েছেন। আবার দেখেছি অনেকে দীর্ঘ সময় শেষ করেও মুফতি হওয়ার সার্টিফিকেট পায়নি।
পরিশেষে ইমাম মালেক রহ এর সে ঐতিহাসিক কথা দিয়ে শেষ করছি, ইমাম মালেক রহকে কেউ ফতুয়া জিজ্ঞেস করলে, তিনি বলতেন আমি জানিনা।
( তথ্যসূত্র : শায়খুল ইসলাম তকি উসমানী হাফিজাহুল্লাহ এর দারুল ইফতার ক্লাস থেকে)
-কেএল