মুফতি নাজমুল হাসান।।
কদিন হল রজব মাসের আগমন ঘটেছে৷ রজব মাস হিজরী মাসগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ ও মহিমান্বিত মাসের নাম। এ মাস আসে রমযানের আগমনী বার্তা নিয়ে। করোনা মহামারীর এই দুর্যোগ সময়ে রজবের মত মহিমান্বিত মাসগুলো আমাদের জন্য রহমত স্বরূপ৷ ইসলাম আগমনের পর বছরে ১২ মাসের মধ্য থেকে রজবসহ চারটি মাসকে আল্লাহ তা'আলা ‘আশহুরে হুরুম’ তথা সম্মানিত মাস বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা বারটি, যা আল্লাহর কিতাব (অর্থাৎ লাওহে মাহফুজ) অনুযায়ী সেই দিন থেকে চালু আছে, যেদিন আল্লাহ আকাশমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ৷ এটাই দ্বীনের সহজ-সরল দাবী৷ সুতরাং তোমরা এমা সমূহের ব্যাপারে নিজেদের প্রতি জুলুম করো না৷ সূরা তওবা: ৩৬
ইমাম আবু বকর জাসসাস (রহ.) বলেন, ‘এসব মাসে ইবাদতের প্রতি যত্নবান হলে, বাকি মাসগুলোয় ইবাদত করা সহজ হয়। আর এ মাসগুলোতে গোনাহ থেকে বেঁচে থাকলে অন্য মাসেও গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়।’ -আহকামুল কুরআন: ৩/১৬৩
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসকে খুবই গুরুত্ব দিতেন। ফলে রজবের চাঁদ দেখা গেলেই তিনি কিছু বিশেষ আমল শুরু করতেন। হাদিস শরিফে এসেছে, হযরত আনাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, যখন রজব মাস শুরু হতো, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন এ দুআটি বেশি বেশি পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়াবাল্লিগনা রমাদান।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’ –সুনানে নাসাঈ: হাদীস নং ৬৫৯
গোনাহের কারণে কলুষিত অন্তরাত্মাকে তওবার মাধ্যমে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে নিতে হবে রজব মাসে। হযরত আবু বকর বলখি (রহ.) বলেন, ‘রজব ফসল রোপণের মাস। শাবান ফসলে পানি সেচ দেওয়ার মাস। আর রমজান হলো- ফসল তোলার মাস।’ তিনি আরও বলেন, ‘রজব মাস ঠাণ্ডা বাতাসের মতো, শাবান মাস মেঘমালার মতো। আর রমজান মাস হলো- বৃষ্টির মতো।’ - লাতায়েফুল মাআরেফ: ১৪৩
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজব মাস থেকেই রমযানের প্রস্তুতি নিতেন। অধিক নফল রোজা ও ইবাদতে কাটাতেন রজব ও শাবান মাস। তাই আমাদেরও কর্তব্য হল রাসূলের এসকল সুন্নাহগুলো অনুসরণ করে রজব মাসের হক আদায় করা এবং বেশি বেশি নফল নামায ও রোযা রাখা।
শিক্ষক: জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলূম, কুমিল্লা৷
-এটি