মোস্তফা ওয়াদুদ
নিউজরুম এডিটর
রাজধানীর কলাবাগানে আনুশকা নামের এক স্কুল শিক্ষার্থীকে গ্রুপ স্টাডির নামে বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিকৃত যৌনাচারের ফলে অনবরত রক্ষক্ষণের ফলে মৃত্যুবরণ করেছে সে। ময়নাতদন্তের পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেসনিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেছেন, বিকৃত যৌনাচারের ফলে রক্তক্ষরণে মারা গেছে আনুশকা।
খবরটি গতকাল ৮ জানুয়ারির। মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে তাই হয়তো জানা সম্ভব হয়েছে। অতি আধুনিকতা ও উদার মনোভাবের দোহাই দিয়ে এমন অসংখ্য ঘটনাইতো ঘটছে। চোখের আড়ালে। মিডিয়ায় আসে না। তাই আমরা জানতে পারি না। এসব ঘটনার জন্য দায়ী আসলে কারা?
জানতে চেয়েছিলাম লণ্ডন এক্সেস জামে মসজিদের খতীব শায়খ মাহমুদুল হাসান এর কাছে। তিনি বলেন, এর জন্য প্রথমত আমাদের দেশের সমাজ ব্যবস্থার পুরো সিস্টেমটাই দায়ী। এরপর দেশের যুবক যুবতীদের নৈতিকতার যে পদস্খলন হয়েছে এটাও দায়ী। সর্বোপরি সন্তানের প্রতি বাবা-মা কিংবা পরিবারের উদাসীনতাই হলো দায়ী। কেননা আমাদের যে পারিবারিক ইনস্টিটিউট আছে সেখান থেকেই মূলত নৈতিকতার শিক্ষা লাভ করেন তারা। সমাজের তরুণ তরুণীরা।
যখন পারিবারিক ইনস্টিটিউট দূর্বল হয়ে পড়ে। নৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষা প্রদান করা হয় তখন সমাজে এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটতেই পারে। তাই এসব থেকে বাঁচতে অবাধ মেলামেশা থেকে বিরত থাকতে হবে।
কথা বলেছিলাম চৌধূরীপাড়া মাদরাসার সাবেক মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ আবু মূসার সাথে। তিনি বলেন, অবাধ মেলামেশা ইসলামে হারাম। অবাধ মেলামেশার কোনো সুযোগ ইসলামে নেই। মাহরাম ছাড়া নারীদের সফরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাছাড়া একজন তরুণী কিভাবে নিজের বাবা ছাড়া মিথ্যা কথা বলে ঘরের বাইরে বের হয়? সেটাই তো ঠিক হয়নি। ফ্রি মিক্সিংয়ের নামে যুবক-যুবতীরা যেভাবে ঘরের বাইরে ঘুরাফেরা করে এটা কখনোই ইসলাম সমর্থন করে না। বরং কঠিনভাবে নিষেধ করে।
তিনি বলেন, আনুশকার মৃত্যুর জন্য আনুশকার বাবা দায়ী করছেন ধর্ষকদের। কিন্তু তার এ চেতনা এখন কেনো জাগলো? এটা তো আরও আগেই বুঝার কথা ছিলো। যদি তিনি ইসলামের বিধানকে মানতেন তাহলে কখনোই নিজের মেয়েকে একা ছেড়ে দিতেন না। ইসলাম নারীকে সুরক্ষিত রাখতে চায়। এজন্য সফরে নারীর সাথে মাহরাম থাকা ওয়াজিব করে দিয়েছে; যাতে করে মাহরাম পুরুষ নারীকে দুশ্চরিত্র ও হীন-উদ্দেশ্য চরিতার্থকারী লোকদের থেকে নিরাপদ রাখতে পারে।
যদি ধর্ষকরাই আনুশকার মৃত্যুর জন্য দায়ী হয় তাহলে রাষ্ট্রীয় আইনে তার কী শাস্তি? প্রশ্ন করেছিলাম ঢাকা জজকোর্ট এর আইনজীবী এ্যাডভোকেট ওমর ফারুককে। তিনি বলেন এটার জন্য উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে অপরাধীরা। বাংলাদেশের আইনে বলা আছে, যদি কোনো ধর্ষক ধর্ষণ করার পরে ধর্ষিতা মেয়ের মৃত্যু হয় তাহলে ধর্ষকের ফাঁসি হবে। আর যদি মৃত্যু না হয় তাহলে ধর্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে।
সবশেষে কথা বলেছিলাম জামিয়া আশরাফিয়া কুমিল্লার মুহতামিম মুফতী শামসুল ইসলাম জিলানীর সাথে। তিনি বলেন, ঘটনা ঘঠে গেলে টনক নড়ে সবার। কিন্তু এর থেকে বাঁচার জন্য ১৪শত বছর পূর্বেই নির্দেশনা প্রদান করেছে ইসলাম। যতদিন পর্যন্ত মানুষ ইসলামি বিধি-বিধানকে না মান বেন ততদিন পর্যন্ত এমন দৃশ্য থেকে মুক্তি পাবে না জনগণ। তাই সবাইকে ইসলামী আদর্শে ফিরে আসতে হবে।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে ইসলাম বিধিবিধিান সম্পর্কে সতর্ক করতে উলামায়ে কেরামের দাযিত্ব কতটুকু? জানতে চাইলে মুপতী শামসুল ইসলাম জানান, এজন্য উলামায়ে কেরামকে মসজিদের মিম্বার, মাহফিল, মিডিয়া ও ইসলাম প্রচারের যতগুলো প্রক্রিয়া হতে পারে সবগুলোতে বেশি বেশি ইসলামের কথা প্রচার করতে হবে।
এমডব্লিউ/