হাছিব আহমদ।।
পৃথিবীতে এখন শতকরা ত্রিশ থেকে পয়ত্রিশ জন তরুন যুবক। এই যুবকরাই আগামীর পৃথিবী গড়ার কারিগর। পবিত্র কোরআন ও হাদিস গবেষণা করলে দেখা যায় ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় তরুণ যুব সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মানুষের জীবন ধারাকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। শৈশব, যৌবন তথা তরুণ ও বার্ধক্য। এই তিন স্তরের মধ্যে বিবেচনা করলে দেখা যায় শেষ্ঠ সময় হল যৌবনকাল।
যৌবনকাল মানুষ অসাধ্য সাধনে আত্মনিয়োগ করতে পারে। হযরত মোহাম্মদ সা. যৌবনের সময়কে গনীমতের মাল তথা মূল্যবান সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করে তা মূল্যায়ন করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন। কেননা এই সময়কে কিয়ামতের দিন জবাবদিহি করতে হবে। আল্লাহ প্রদত্ত যৌবনের এই মহা মূল্যবান সময়কে আল্লাহর হুকুম মত পরিচালনা না করলে কঠিন ভাবে কিয়ামতের ময়দানে হিসাব দিতে হবে।
যৌবনের এই সোনালী সময় মানুষের শরীর থাকে সুস্থ, সবল, শক্ত ও উদ্দীপনা কল্পনা ভাবনায় পূর্ণ। এ সময় তার হাতে থাকে উপযুক্ত ও পর্যাপ্ত সময় কিন্তু দুঃখজনক হলে সত্যি তা অধিকাংশ মানুষ তা সঠিক ভাবে ব্যায় করে না। ইবনে আব্বাস রা. বলেন রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন দু’টি নিয়ামতের বিষয় অধিকাংশ মানুষ ধোকার মধ্যে আছে তা হল সুস্থতা তা সু-শরীর। সহীহ বোখারী -৬৪১২।
যৌবন যেমন সুস্থতা ও পূর্ণতার স্বরূপ তেমনি পরিপূর্ণ জীবন প্রানের স্বরূপ তাইতো ইসলাম শিশু, পঙ্গু, দুর্বল, অসুস্থ, বৃদ্ধ মহিলাদের উপর জিহাদ (সংগ্রাম) ফরজ করেনি। সংগ্রাম ফরজ করা হয়েছে যুবকদের জন্য। শুধু ইসলাম ধর্ম নয় জাতি বর্ণ নির্বিশেষে সবাই যৌবনের জয়গান গেয়েছেন। প্রসিদ্ধ সাহিত্যিকদের সাহিত্য কর্মের একটা উল্লেখ যোগ্য স্থান দখল করে আছে এই যৌবনের উৎসাহ ও উদ্দীপনাময় বক্তব্য সমাহারে। সুতরাং উন্নত ও অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে যুবকদের ভূমিকার কোন বিকল্প নেই। এই জন্য তাদেরকে উপযুক্ত জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে যোগ্য হতে হবে। যাবতীয় ত্রুটি দুর্বলতা ও অলসতা তন্দ্রা দূর করে সাহসী হতে হবে। নৈরাশ্যে ও হতাশাকে পদধূলিত করে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে সম্মুখ পানে এগিয়ে যেতে হবে দৃঢ়তার সঙ্গে।
ইতিহাস সাক্ষ্য তাকওয়াবান যুবকদের দ্বারা পৃথিবী বেশি উপকৃত হয়েছে এবং পৃথিবীতে উত্তম আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হযরত মোহাম্মদ সা. তাকওয়াবান যুবকদের দ্বারা বদর, উহুদ, খন্দক, তাবুকসহ অধিকাংশ যুদ্ধ বিজয় লাভ করেছে তরুণদের নিয়ে, তাদের ত্যাগ ও সাহসীকতার সাথে। তেমনি করে ফরাসী বিপ্লব, চীন বিপ্লব, বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনসহ অনেক বিজয়ে তরুনদের অবদান অনেক। তাকাওয়াবান যুবকরাই সেদিন আরশের নিচে ছায়া পাবে।
সুতরাং সকলে আমরা শপথ করি, এই দুনিয়ায় জীবনে আল্লাহ প্রদত্ত অমুল্য সম্পদ তরুন যৌবনের গুরুত্ব উপলব্ধি করে যথাযথ ব্যাবহারে জান্নাতে যুবকদের কাতারে শামিল হতে সর্বাত্মক চেষ্টা করি। আমিন।
লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
-এএ