কামরুল ইসলাম সিরাজী: সব কাজেরই প্রাথমিক স্তরটা কঠিন মনে হয়। মনে হয় আমি পারব না। আমাকে দিয়ে এ কাজ হবে না, অথবা পারব কী পারব না!– এজাতীয় দ্বিধাদ্বন্দ্ব আমাদের মস্তিষ্ককে দখল করে রাখে; যা অনেক সময় আমাদের সফলতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় । কিন্তু যারা এসব দ্বিধাদ্বন্দ্বকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়, তাঁরাই দেখা পায় সফলতার । বিখ্যাত কবি ও দার্শনিক আল্লামা শেখ সাদী রাহিমাহুল্লাহ বলেন: "ধৈর্য ধারণ করো, সহজ হওয়ার আগে সবকিছুই কঠিন মনে হয়।"
এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন হয় সময়, ধৈর্য ও লেগে থাকার ইচ্ছাশক্তি। কেননা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘যার জীবনে যত পরিবর্তন, যত সমস্যা আসবে; সে ততোই সফল হবে। কেননা সকল সমস্যা তার সঙ্গে করে নতুন একটি সমাধান নিয়ে আসে।’
এ ক্ষেত্রে আমার একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলা যেতে পারে, আমি ২০১৯-২০ ইং সালে আদব ( আরবী সাহিত্য) বিভাগে ভর্তি হই। বিভিন্ন কারণে শুরুর দিকে একটু হীনমন্যতা কাজ করছিল। মনে হয়েছিল তেমন একটা ফায়েদা হবে না। বছরটা হয়তো বিফলেই যাবে। তবুও ভাবলাম, ‘দেখি না কী হয়?’ তাই ধৈর্য ধরে বছরজুড়ে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে গেলাম।
দেখা গেল, বছর শেষে আমার এই বিভাগ সম্বন্ধে স্বচ্ছ একটা ধারণা তৈরি হয়ে গেছে। আর ফায়দার বিষয়টিও আমার সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যদি এতটুকু সময় ব্যয় আর ধৈর্য ধারণ করা না হত, তাহলে হয়তো আমি এমন কল্যাণকর অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিতই থেকে যেতাম।
চীনা দার্শনিক কনফুশিয়াস(৫৫১-৪৭৯ খ্রিঃ পূর্বাব্দ ) এর উক্তি এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন: "ধৈর্যের অভাবের কারণে অনেক বড় বড় সম্ভাবনা ধ্বংস হয়ে যায়।" আমি বুঝতে পারলাম যে, কোনো বিষয়ের আদ্যোপান্ত না জেনে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন না করে হুট করে সিদ্ধান্ত নেওয়া অসমীচীন কাজ। যা কোন সচেতন, বিবেকবান মানুষের কাজ হতে পারে না।
পরিশেষে বলতে হয় " রাতারাতি সাফল্য বলতে কিছু নেই। মনোযোগ দিলে দেখা যায় সব সাফল্যই অনেক সময় নিয়ে আসে।-স্টিভ জবস
-কেএল