মাওলানা মুহাম্মদ আবূ মূসা
লেখক, প্রাবন্ধিক, ধর্মীয় আলোচক ও শায়খুল হাদিস
আল্লাহ যে আমাদের দুনিয়ায় পাঠালেন। আমাদের মৌলিক কাজ হলো দীনি কাজ। দীনি কাজের সহায়ক হবে দুনিয়ার কাজ। দুনিয়ার কাজ মূল কাজ নয়। মূল কাজ হলো দীনি কাজ। আমরা এখানে ভ্রান্তিতে আছি। সেটা হলো আমরা দীনি কাজকে মূল মনে করি না। দুনিয়ার কাজকে মূল কাজ হিসেবে করে যাই। আর দীনি কাজ ছেড়ে দেই। যার কারণে আমাদের সমস্যা হয়ে যাচ্ছে।
এখন কথা হলো, যে কোনো অবস্থায় অর্থাৎ আল্লাহ আমাকে ভালো রাখেন, সুখে রাখেন, দুখে রাখেন। আমাকে যে কোনো হালাতে রাখেন। ধনী রাখেন, গরীব রাখেন। বিপদে রাখেন, আপদে রাখেন। পদে রাখেন, পদ ছাড়া রাখেন। যে কোনো অবস্থায় আমাকে দীনি কাজের সাথেই সম্পৃক্ত থাকতে হবে। দীনি কাজই আমাকে করে যেতে হবে। বড়দের একটা কথা আছে, 'করতে করতে মরতে চাই। মরতে মরতে করতে করতে চাই।' অর্থাৎ আমার শুরুর কাজও হবে দীনি কাজ। শেষ কাজও হবে দীনি কাজ। আমার জীবনের শুরু কাজ দীনি কাজ। যেমন, যখন আমি দুনিয়ায় আসি তখন আমাকে আজান দেয়া হয়। আমার শেষ কাজ দীনি কাজ। যেমন, যখন আমি দুনিয়া থেকে বিদায় নেই তখনো আমাকে জানাজার নামাজের মাধ্যমে বিদায় দেয়া হয়।
তাহলে শুরুর কাজও যদি দীনি কাজ হয়। শেষের কাজও যদি দীনি কাজ হয়। তাহলে মাঝখানের কাজটা কি হবে? মাঝখানের কাজটাও দীনি কাজ হওয়া চাই।
আমি দুনিয়ায় আসছি আল্লাহর ইচ্ছায়। আবার যাবোও আল্লাহর ইচ্ছায়। তাহলে যে কয়দিন আমাকে আল্লাহ দুনিয়ায় রাখেন সেটা আমি কার ইচ্ছায় চলবো? জবাব হবে যে আমি আল্লাহর ইচ্ছায় চলবো। আর আল্লাহর ইচ্ছাটাই হলো দীনি কাজের মাধ্যম। যদি আমি দীনি কাজ করি তাহলে আমার কি লাভ হবে? অনেকগুলো লাভ হবে। যেমন,
১. আমার জীবন সুন্দর হবে।
২. আমার পরিবার সুন্দর হবে।
৩. আমার সমাজ সুন্দর হবে।
৩. আমার রাষ্ট্র সুন্দর হবে।
৪. সারা পৃথিবীর পরিবেশ সুন্দর হবে।
সর্বোপরি আমাদের আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন যে মাকসাদ নিয়ে। সে মাকসাদ হাসিল হবে। সর্বশেষ তিনি আমার প্রতি রাজীও হবেন।
একজন গোলামের এটাই সবচেয়ে উত্তম পাওনা যে, তার মুনীব তার প্রতি রাজী হয়ে যায়। সুতরাং আল্লাহকে সর্বাত্মকভাবে রাজী করানোর মাধ্যম হলো দীনি কাজ। বর্তমানে আমরা এক ক্লান্তিকাল অতিক্রম করছি। মহামারি করোনাভাইরাস সহ সবকিছু মিলিয়ে। এসব থেকে মুক্তির একটি উপায় রয়েছে। সেটি হলো দীনি কাজ।
এজন্য আমরা আল্লাহর কাছে চাই। আল্লাহ যেনো আমাদের যে কোনো অবস্থায় দীনি কাজের সাথে সম্পৃক্ত রাখেন এবং আমানতে রাখেন।
লেখকের বর্তমান অবস্থান: আব্দুল হাফেজ তাহসীনুল কুরআন মাদরাসা (জামিয়া আফতাবনগর), ঢাকা।
এমডব্লিউ/