আওয়ার ইসলাম: করোনার প্রাদুর্ভাব দেশে এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে এলেও সামনের শীতে পরিস্থিতি কিছুটা খারাপ হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তার সরকার সব পরিস্থিতি সামলে নেয়ার মতো প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় করোনা মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৬৪ কোটি টাকা অনুদান দেয় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার পক্ষে এই অনুদান গ্রহণ করেন মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে, সবাই, আমি কাউকে বাদ দিতে পারবো না। সেই জন্য হয়তো আমরা এটা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। সামনে শীত, আরেকটু হয়তো খারাপের দিকে যেতে পারে। তবুও আমাদের এখন থেকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
ত্রাণ তহবিলে অর্থ দেয়ায় বিএবির প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন সব সময় আমাদেরকে যেকোনো সময় একটা কিছু হলেই কোনো দুর্যোগ, দুর্বিপাক যা কিছু হোক এমনকি মুজিববর্ষে সবসময় আপনারা এগিয়ে এসেছেন। নিজেরা এগিয়ে এসেছেন তাই আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য চালাতে হবে। আর আসলে প্রাইভেটে ব্যাংকটা দেয়ার সিদ্ধান্ত আমরাই নিয়েছিলাম, আমরা দিয়েছি সব থেকে বেশি। গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মানুষ যাতে ব্যাংকিং ব্যবহারে অভ্যস্ত হয় তার ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি। এবং এমনকি কৃষকদের ১০ টাকায় অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। অর্থাৎ মানুষকে অভ্যস্ত করা, যাতে ব্যাংকের মাধ্যমে তারা তাদের আর্থিক লেনদেন করতে পারে সেই পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যত বেশি প্রাইভেট ব্যাংক দিয়েছি, এতে ব্যাপক হারে কর্মসংস্থান হয়েছে। অনেক মানুষের চাকরি হয়েছে। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। আর আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যও সম্প্রসারিত হয়েছে। সেখানে ব্যাংকগুলো যাতে ভালোভাবে চলে আমরা সেটাই চাই। সেক্ষেত্রে ব্যাংকের আইন বা যা কিছুই আমরা করি। আপনারা যখন যে দাবিটাবি আনেন, যেটা যুক্তিসঙ্গত সেটা আমরা সবসময়ই বিবেচনা করি। আজকেও বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল সাহেব যে কথাগুলো বলেছেন, আমি সেটা দেখবো। যদি সেখানে সমস্যা থাকে তবে সেখানে যাতে সমস্যা না হয় তা আমরা অবশ্যই বিবেচনা করবো। আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে ব্যাংকটা যেন ভালোভাবে চলে সেদিকে আপনারা বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছু কিছু ব্যাংক আছে অতি দুর্বল হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে অনেক সময় মার্জ করাতে হয়। সেটা অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে কোনটা ঠিকমতো চলছে। কোনটা ঠিকমতো চালাতে পারছে কি না? সেগুলো বিবেচনা করেই করা হবে। অবিবেচনা করে কিছুই করা হবে না এইটুকু ভরসা রাখবেন। আপনাদের এই অনুদান সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজে লাগেবে। সেই জন্য আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে দেখা হচ্ছে না। তবুও বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আপনারা আমার অফিসে কষ্ট করে এসেছেন সেই জন্য সবাইকে আন্তরিকে ধন্যবাদ জানাই। সবাই সুস্থ থাকেন এটাই আমরা চাই। দোয়া করেন দেশটা যাতে এই করোনার এই মহামারি থেকে মুক্তি পায়। সারা বিশ্বই যাতে মুক্তি পায়। মানুষের সত্যিই খুব কষ্ট হচ্ছে এই করোনার কারণে। তবুও বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রাখার জন্য আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। তার জন্য যা যা দরকার সেটা আমরা দিয়ে যাচ্ছি। আমরা জনগণের জন্য কাজ করবো এটাই আমাদের লক্ষ্য।
-এএ