আওয়ার ইসলাম: রোহিঙ্গাদের পাচারকারী বলেছিল সাতদিনের মধ্যে মালয়েশিয়া যাওয়া যাবে। বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে থাকা প্রায় ৩০০ রোহিঙ্গা সেই কথা বিশ্বাস করে কাঠের নৌকায় ওঠেন। তারপর ছয় মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মালয়েশিয়ায় ঢোকা হয়নি। পর ঠাঁই পেয়েছেন ইন্দোনেশিয়ায়।
নিজেদের দেশ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে দেশে-দেশে ঘুরতে থাকা এই রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, এই ছয় মাস ধরে তাদের নির্যাতন করেছে পাচারকারী চক্র। বেশির ভাগ সময় কেটেছে না খেয়ে। নরকযন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে অনেকে নৌকায়ই মৃত্যুবরণ করেন!
‘আমাদের বলা হয়েছিল সাত থেকে আট দিনের ভেতর মালয়েশিয়ায় যাওয়া যাবে। কিন্তু মাসের পর মাস আমাদের সাগরে ভাসতে হয়েছে,’ বেঁচে যাওয়া এক পুরুষ রোহিঙ্গা এএফপিকে বলেন, ‘অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করেছি আমরা। ওরা আমাদের সব সময় মেরেছে। কেটেছে!’
ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ প্রধান ইপ্টু ইরওয়ানস্যা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের ভেতর ১৪ শিশুর পাশাপাশি ১৮১ জনই নারী।
কামরুন নাহার নামের এক নারী জানিয়েছেন, কত লাশ নদীতে ফেলা হয়েছে তা তিনি মনে রাখতে পারেননি! ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, পাচারকারীরা প্রতিজনের থেকে ২৪০০ ডলার করে নিয়েছে। এরপর আরও অর্থের দাবিতে তাদের নির্যাতন করেছে।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এভাবে নির্যাতন করলেও টাকার জন্য সবাইকে মেরে ফেলতে চায়নি পাচারকারীরা। ইন্দোনেশিয়া প্রশাসন জানিয়েছে, স্থানীয় এক জেলে মাছ ধরার সময় উপকূল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গত সপ্তাহে ওই রোহিঙ্গাদের দেখতে পান। পরে তাদের উজং ব্ল্যাং সৈকতে নিয়ে আসেন।
অলাভজনক সংস্থা আরাকান প্রজেক্টের পরিচালক ক্রিস লেওয়া রয়টার্সকে বলেন, সোমবার আচেহ প্রদেশে পৌঁছানো রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে মার্চ অথবা এপ্রিলের শুরুতে যাত্রা করেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মালয়েশিয়ায় ঢোকা। কিন্তু করোনাকালে সীমান্তে কড়াকড়ি অবস্থা থাকায় তারা দেশটিতে যেতে পারেননি। ওদিকে ঢুকতে দেয়নি মিয়ানমারও।
-এটি