আওয়ার ইসলাম: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সৈনিক বলে পরিচয় দেয়া দুই ব্যক্তি এখন নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ-এ৷ কয়েকটি গণমাধ্যমের দাবি, তাদেরকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার সাক্ষী হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে হাজির করা হতে পারে৷
৩০ বছরের জাও নাইং তুন এবং ৩৩ বছরের মিও উইন তুনকে প্রথম দেখা যায় মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির ইউটিউব চ্যানেলে৷ এ বছরের ২২ মে এই দুজনসহ মোট চারজনকে দেখা যায় মিয়ানমার আর্মির পোশাক পরে বসে থাকতে৷ চারজনই দাবি করেন, নানা নির্যাতনের শিকার হয়ে তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে এসেছেন৷
ক্যামেরার পেছনে থাকা প্রশ্নকর্তার বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তারা নিজেদের ব্যাটেলিয়ন, কমান্ডিং অফিসারের পরিচয় দেয়ার পর নিজেদের করা নানা অপরাধের ঘটনাও বর্ণনা করেন৷ এসব অপরাধের মধ্যে গণহত্যাও রয়েছে৷
ওই চার সৈনিকের দুজনকে নেদারল্যান্ডসে আইসিসির হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস৷
তবে বার্তাসংস্থা রয়টার্স আইসিসির মুখপাত্র ফাদি এল আবদাল্লাহকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, এই দুই ব্যক্তি সংস্থাটির হেফাজতে নেই৷ তিনি বলেন, ‘‘এই প্রতিবেদনগুলোর (নিউ ইয়র্ক টাইমস ও অন্যান্য) সত্যতা নেই৷ এই ব্যক্তিরা আমাদের হেফাজতে নেই৷’’
এদিকে আদালতে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা কানাডিয়ান আইনজীবী পায়াম আখাভান জানিয়েছেন, ‘কোনো এক সময়’ এই দুই ব্যক্তি আশ্রয় চেয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে হাজির হয়েছিলেন এবং ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো গণহত্যা ও ধর্ষণের কথাও স্বীকার করেছিলেন৷ কিন্তু এর পর তাদেরকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছিল কিনা এ বিষয়ে কিছু বলেননি আখাভান৷
রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘আমি কেবল বলতে পারি এই দুই ব্যক্তি এখন বাংলাদেশে নেই৷’’
এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকার বা সেনাবাহিনীর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি৷ বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এই ব্যক্তিরা আরাকান আর্মির হেফাজতেই এতদিন ছিলেন৷ আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত৷ কিন্তু তারা কিভাবে আরাকান আর্মির হেফাজতে এলেন এবং কীভাবে নেদার্ল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে এলেন, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য কারো কাছ থেকেই পাওয়া যায়নি৷
আরাকান আর্মির একজন মুখপাত্র খিনে থু খা রয়টার্সকে জানিয়েছেন এই দুই ব্যক্তি মিয়ামনমার সেনা সদস্য ছিলেন এবং সেনাবাহিনী থেকে তারা পালিয়ে এসেছিলেন৷ তাদেরকে আরাকান আর্মি কখনোই যুদ্ধবন্দি হিসেবে আটক করেনি বলেও জানিয়েছেন থু খা৷ ভিডিওতে হাজির হওয়া চার ব্যক্তির কে এখন কোথায় আছেন সে বিষয়ে কিছু জানাতে রাজি হয়নি সংগঠনটি৷
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত- আইসিসিতে আর্জেন্টিনার দায়ের করা একটি মামলায় এই দুই ব্যক্তিকে রাজসাক্ষী হিসেবে হাজির করা হতে পারে বলে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে৷ একই শহরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত- আইসিজেতে গাম্বিয়ার করা অপর একটি মামলাতেও তাদের বক্তব্য প্রভাব ফেলতে পারে৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে
-এটি