আওয়ার ইসলাম: অর্শরোগ বা পাইলস (হেমোরয়েড) খুব পরিচিত একটি শারীরিক সমস্যা। বৃহদান্ত্রের শেষাংশে রেকটামের ভিতরে ও বাইরে থাকা কুশনের মতো একটি রক্তশিরার জালিকা। যা প্রয়োজন সাপেক্ষে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়। এর নাম হেমোরয়েড বা পাইল। যখন পায়ুপথের এসব শিরার সংক্রমণ এবং প্রদাহ হয়, চাপ পড়ে তখন হেমোরয়েড বা পাইলসে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। যাকে সাধারণ কথায় অর্শরোগ বা পাইলস বলা হয়। মলদ্বারে যন্ত্রণা, রক্ত পড়া, মলদ্বার ফুলে ওঠা, জ্বালা করা ইত্যাদি অর্শ্বরোগের সাধারণ উপসর্গ।
ফাইবারযুক্ত খাবারের অভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, স্থূলতা, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে অথবা বসে থাকার অভ্যাস ইত্যাদি কারণে এই রোগ শরীরে বাড়তে থাকে। তবে কিছু ঘরোয়া উপায়েও এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। জেনে নিন সেই উপায়গুলো সম্পর্কে
বরফ
ঘরোয়া উপায়ে অর্শ নিরাময় করার অন্যতম উপাদান বরফ। বরফ রক্ত চলাচল সচল রাখে এবং ব্যথা দূর করে দেয়। একটি কাপড়ে কয়েক টুকরো বরফ পেঁচিয়ে ব্যথার স্থানে ১০ মিনিট রাখুন। এভাবে দিনে বেশ কয়েকবার বরফ ব্যবহার করলে ভাল ফল পাবেন।
অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার
একটি তুলোর বলে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার লাগিয়ে ব্যথার স্থানে লাগান। শুরুতে এটি জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করবে, কিন্তু কিছুক্ষণ পর এই জ্বালাপোড়া কমে যাবে। এটি পদ্ধতিটিও দিনে বেশ কয়েকবার অবলম্বন করুন। অভ্যন্তরীণ (ইন্টারনাল) অর্শরোগের জন্য এক চা চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার এক গ্লাস জলে মিশিয়ে দিনে দু’বার খান। এর সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।
অ্যালোভেরা
বাহ্যিক (এক্সটারনাল) অর্শরোগের জন্য আক্রান্ত স্থানে অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। এটি দ্রুত ব্যথা কমিয়ে দিতে সাহায্য করবে। আভ্যন্তরীণ অর্শরোগের ক্ষেত্রে অ্যালোভেরা পাতার কাঁটার অংশ কেটে জেল অংশটুকু একটি প্ল্যাস্টিকের প্যাকেটে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। এ বার এই ঠান্ডা অ্যালোভেরা জেলের টুকরো ক্ষত স্থানে লাগিয়ে রাখুন। এটি জ্বালা, ব্যথা, চুলকানি কমিয়ে দিতে সাহায্য করবে।
অলিভ অয়েল
প্রতিদিন এক চা চামচ অলিভ অয়েল খান। এটি দেহের প্রদাহ দ্রুত হ্রাস করতে সাহায্য করে। অর্শরোগে নিরাময়ের ক্ষেত্রে এটি খুবই কার্যকরী।
আদা এবং লেবুর রস
ডিহাইড্রেশন অর্শরোগের অন্যতম আরেকটি কারণ। আদাকুচি, লেবু এবং মধু মিশ্রণ দিনে দু’বার খান। এই মিশ্রণ নিয়মিত খেলে অর্শরোগ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ছাড়া দিনে অন্তত ২-৩ লিটার জল খেলেও অনেকটা উপকার পাওয়া যায়।
মুলা
মুলা দেহের অর্শ্ব রোগ বা পাইলস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে খুবই উপকার সাধন করে। টাটকা মুলার রস অর্শ নিরাময়ের একটি কার্যকর খাদ্য ঔষধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যারা অর্শ রোগে ভুগছেন তারা টাটকা মুলার রস ৬০-৯০ মিলিলিটার মাত্রায় সকাল বিকাল উপকার পাবেন। প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ মুলায় পটাসিয়াম, ভিটামিন সি, ফোলেট, আঁশ, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায়। মুলাতে রয়েছে সিসটিন সমৃদ্ধ প্রোটিন এর নির্যাস এন্টিইউরোলিথিক।ৎ
এমডব্লিউ/