আন্দামান নওশাদ: কিনলেই অর্থ ফেরতের অস্বাভাবিক ‘ক্যাশব্যাক’ অফার দিয়ে ব্যবসা করছে বাংলাদেশি ডিজিটাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালি। ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক অফার দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ১০০ টাকার পণ্য কিনলে সমপরিমাণ বা তার চেয়েও বেশি অর্থ ফেরত দেয প্রতিষ্ঠানটি। এমন লোভনীয় অফারে হাজার হাজার গ্রাহক আকৃষ্ট হচ্ছেন।
বিষয়টি কি আসলে ইসলাম সমর্থন করে? জানতে চেয়েছিলেন, জামিয়া রাহমানিয়ার প্রধান মুফতি ও মুহাদ্দিস মুফতি হিফজুর রহমান এর কাছে। তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেন, এখানে তাদের পলিসি কী সেটা আগে জানতে হবে। তবে সমষ্টিগতভাবে বলা যায়, লসে পণ্য বিক্রি করা উচিত না। ইসলাম কোনো ঠগবাজিতে বিশ্বাসী না। ধোঁকা দেয়া কিংবা প্রতারণা করা ইসলামে নেই। রাসূল সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতারণা করলো সে আমাদের দলভূক্ত নয়। সুতরাং যদি পন্য কেনাবেচার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নেয়া হয় তাহলে সেটা ইসলাম কখনোই সমর্থন করবে না।
পণ্য কেনার সাথে সাথে দাম পরিশোধ করতে হয় ক্রেতার। বিক্রেতাও নগদ পণ্য ডেলিভারী দিবেন। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যদি এমন হয় যে, বিক্রেতা আগে টাকা নিবেন পরে ‘বেঁধে দেয়া নির্দিষ্ট সময়ে’ পণ্য দিবেন। এটা কী ইসলামে জায়েজ আছে? মুফতি হিফজুর রহমানকে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন হ্যাঁ! এটা জায়েজ। কেননা এটাকে ইসলামের পরিভাষায় ইসতেহসান বলা হয়। অর্থাৎ পণ্য অর্ডার দেয়ার মতো হলো এটি। এটার উদাহরণ দেয়া যেতে পারে এভাবে। কোনো ব্যক্তি দোকানে পণ্য অর্ডার দিলো। অর্ডার দেয়ার সময়ই টাকা পরিশোধ করে দিলো। এরপর দোকানদার সে পণ্যটির ব্যবস্থা করে দিলো। এখানে ইসলামে কোনো বিধিনিষেধ নেই। অর্থাৎ পণ্য কিনতে গিয়ে আগে দাম পরিশোধ করাতে কোনো সমস্যা নেই।
তবে এখানে কথা হচ্ছে নির্দিষ্ট যে সময় বেঁধে দেয়া হয় সে সময়ে গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ করতে হবে। না হয়, আগেই গ্রাহককে বেঁধে দেয়া নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য সরবারাহ না করার বিষয়টি জানিয়ে রাখতে হবে। অন্যথায় ব্যবসায় স্বচ্ছতার উপর প্রশ্ন করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। যা ব্যবসার জন্য ভালো ফলাফল বয়ে আনবে না। কথাগুলো বলছিলেন ঢাকার একটি মসজিদের খতীব মুফতি কাওনাইন মুস্তাকিম।
তিনি বলেন, বর্তমানে অনলাইন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো যে সময়ে পণ্য ডেলিভারী দেয়ার কথা থাকে। সে সময়ে পন্য ডেলিভারী না দিয়ে আরও কিছুদিন লেট করে । যা ইসলাম সমর্থন করে না।
এমডব্লিউ/