মোস্তফা ওয়াদুদ: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বেড়েছে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান এ ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে নোটিশ প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ওদিকে আগামী ৮ আগস্ট থেকে দেশের সব কওমি মাদরাসা খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সম্মিলিত কওমি মাদরাসা শিক্ষা সংস্থা আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। গত বৃহস্পতিবার হাইয়াতুল উলয়ার জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দেশের দুই ধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দু’রকমের সিদ্ধান্ত আসায় দোটানায় ভুগছে দেশের ৪০ লাখ কওমি শিক্ষার্থী। সবার প্রশ্ন এখন একটাই, ৮ আগস্ট কি খুলছে কওমি মাদরাসা?
এমন ধোয়াসাচ্ছন্ন বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করেছিলাম বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব ও হাইয়াতুল উলইয়ার সদস্য মাওলানা মাহফুজ হক এর সাথে।
তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেন, কওমি মাদরাসা ও সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঝে বেশ কিছু পার্থক্য আছে। কওমি মাদরাসাগুলো শুধু শিক্ষা কেন্দ্র নয়; শিক্ষা কেন্দ্রের পাশাপাশি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও। সরকার যেহেতু মসজিদ খুলে দিয়েছে, হিফাজখানা বা হিফজ মাদরাসা খুলে দিয়েছে এমন কী অঘোষিতভাবে কুরবানির কাজের জন্য ইতিবাচক মানসিকতাও দেখিয়েছে। সে হিসেবে আমরা আশাবাদী ৮ আগস্ট হাইয়াতুল উলইয়ার ঘোষণা অনুযায়ী সরকার কওমি মাদ্রাসার স্বাভাবিকধারাও খুলতে বাঁধা দিবে না।
তাছাড়া কওমি মাদরাসা আবাসিক ব্যবস্থাপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাহির থেকে আশা যাওয়ার সংখ্যা খুবই কম। সেই বিবেচনায়ও নিরাপদ শিক্ষা কেন্দ্র এ-ই দীনি মারকাজ।
আগামী ৮ আগস্ট হাইয়াতুল উলইয়ার দেওয়া ঘোষণা বহাল থাকছে কি না জানতে চাইলে মাওলানা মাহফুজ হক বলেন, সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে কি না তা মুরব্বিরা ঠিক করবেন। যেহেতু সরকার ছুটি বৃদ্ধি করেছে বিষয়টি নিশ্চয় নেতৃবৃন্দ আলোচনা করবেন। প্রয়োজনে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিবেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সাংঘর্ষিক এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলাম আল হাইআতুল উলয়্যা লিল জামিআতিল কওমিয়্যা বাংলাদেশ ও জাতীয় মুফতি বোর্ডের সদস্য, জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব এবং আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া ইদারাতুল উলুম আফতাবনগর মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মোহাম্মদ আলীর কাছে।
তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেন, সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটি সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ কওমি মাদরাসার পাঠদান হলো মসজিদভিত্তিক।
আমরা দেখেছি, সৌদি আরবে মসজিদভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেনি। সুতরাং এখানে সরকার যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এর আওতায় কওমি মাদরাসা আসবে না। তাই কওমি মাদরাসার জন্য কওমি বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নিবে সেটাই বাস্তবায়ন করা দরকার বলে মনে করি।
এর আগে আলেমদের আবেদনের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত ১২ জুলাই থেকে সীমিত আকারে মাদরাসাগুলোর হিফজ বিভাগ খুলে দেওয়া হয়েছিলো। পরে ১৩ জুলাই হাইআতুল উলয়ার বৈঠকে মাদরাসা খোলার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে মধ্যস্থতা করতে একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়। এরপর গত ২৩ জুলাই সম্মিলিত কওমি মাদরাসা শিক্ষা সংস্থা আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ আগামী ৮ আগস্ট মাদরাসা খোলার ঘোষণা দেয়।
এমডব্লিউ/