সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


ঢাকার প্রথম মসজিদ ‘বিনত বিবির মসজিদ’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোস্তফা ওয়াদুদ: বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অন্যতম পরিচয় হলো, এটি মসজিদের শহর। মুসলিম অধ্যুষিত এ দেশে কেবল দিন দিন মুসলমানের সংখ্যাই বাড়েনি। বেড়েছে মসজিদের সংখ্যাও। মুসলমানগণ এ অঞ্চলে আগমনের পর থেকেই মসজিদ নির্মাণে মনোযোগ দেন। একে একে শহর থেকে গ্রামে, অলিগলিতে মসজিদের সংখ্যা বেড়েছে। সে ধারাবাহিকতায় রাজধানী ঢাকা পেয়েছে ‘মসজিদের শহর’ অভিধা।

কিন্তু ঢাকার প্রাচীনতম মসজিদ কোনটি? এ নিয়ে ইতিহাসবিদদের মাঝে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। কেননা মোগলপূর্ব যুগের পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে ঢাকার পুরনো অংশে দুটি ও মিরপুরে একটি প্রাচীন মসজিদ আছে। ‍পুরনো অংশের দুটি মসজিদের একটির নাম ‘বিনত বিবির মসজিদ’। যার নির্মাণ সন: মসজিদের গায়ে উৎকীর্ণ শিলালিপি অনুসারে ৮৬১ হিজরি সালে, অর্থাৎ ১৪৫৭ খ্রিষ্টাব্দে। অন্যদিকে ‘জাতীয় মসজিদখ্যাত’ ‘বায়তুল মোকাররম’ আধুনিক ঢাকার কেন্দ্রস্থলে নির্মিত হয় ২৬ ডিসেম্বর ১৯৬২। এসব দিক বিবেচনায় ‘বিনত বিবির মসজিদ’ ঢাকার প্রাচীনতম মসজিদ।

তাছাড়া বাংলা পিডিয়ার তথ্যমতে, বিনত বিবির মসজিদই ঢাকার সবচেয়ে পুরনো মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন ও শহরের প্রথম মসজিদ। যা ছয়-সাত কাঠা জায়গায় গড়ে ওঠে। মসজিদটি চার কোণবিশিষ্ট। এটির আদি গঠনশৈলীতে একটি কেন্দ্রীয় গম্বুজ থাকলেও বাংলা ১৩৩৭ (১৯৩০ খ্রি.) সনে দ্বিতীয়বার সংস্কারকালে আরো একটি গম্বুজ যুক্ত করা হয়, যা মসজিদটির বিবর্তন ও সম্প্রসারণের স্পষ্ট ধারণা দেয়।

মসজিদের দেয়ালে স্থাপিত একটি কালো পাথরে ফারসি ভাষায় লিখিত বর্ণনায় রয়েছে, সুলতান নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহর আমলে আরকান আলী নামক এক পারস্য সওদাগর ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ঢাকার নারিন্দায় বসবাস শুরু করেন এবং তিনিই ৩০-৪০ জন মুসল্লির ধারণক্ষমতাসম্পন্ন বিনত বিবির মসজিদটি নির্মাণ করেন।

ঢাকায় বসবাসকালেই আরকান আলীর অতি আদরের কন্যা বিনত বিবির আকস্মিক মৃত্যু হয় এবং তাঁকে ওই মসজিদসংলগ্ন স্থানে সমাহিত করা হয়। কন্যার আকস্মিক মৃত্যুর শোকে-দুঃখে পিতা আরকান আলীও ছয় মাস পর মৃত্যুবরণ করলে তাঁকেও কন্যার পাশেই ওই মসজিদসংলগ্ন স্থানে সমাহিত করা হয়। অন্য একটি বর্ণনা মতে, মাহরামাতের কন্যা মুসাম্মাৎ বখত বিনত বিবি মসজিদটি নির্মাণ করান।

যদিও ধরে নেওয়া হয় যে বিনত বিবির মসজিদ ঢাকার প্রথম মসজিদ; কিন্তু অকাট্যভাবে এ কথা বলা খুব কঠিন যে এ মসজিদ নির্মাণের আগে ঢাকায় কোনো মসজিদ নির্মাণ করা হয়নি। কেননা ড. আব্দুল করিমের ‘মোগল রাজধানী ঢাকা’ বই ও আরো অনেকের মতে, ঢাকার মুগদার মাণ্ডা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ‘মাণ্ডা মসজিদ’-এর চেয়েও প্রাচীন মসজিদ। শিলালিপি অনুযায়ী ‘মাণ্ডা মসজিদ’ ১৪৩৩ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারিতে নির্মিত। ঐতিহাসিক ‘মাণ্ডা মসজিদ’ বর্তমানে ‘নান্দু ব্যাপারী মসজিদ’ নামে পরিচিত।

সূত্র : ইন্টারনেট

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ