মোস্তফা ওয়াদুদ: পশু কুরবানি করবেন কিন্তু পশুর চামড়া কি করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে অনেকে স্বাভাবিক উত্তর দেন যে, চামড়া বিক্রি করে দিবো। কিন্তু বিক্রি করা ছাড়াও যে এর আরও ব্যবহারবিধি আছে তা হয়তো অনেকেরই জানা নেই। এ নিয়ে ইসলাম দিয়েছে সুন্দর সমাধান।
কুরবানির চামড়া বিক্রি
কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করা যাবে। তবে বিক্রিত অর্থ কুরবানি প্রদানকারী নিজ কাজে খরচ করতে পারবেন না। বরং এ অর্থ গরিব-মিসকিনদের মাঝে বিতরণ করে দিতে হবে।
কেননা হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘আমি যেন কুরবানির মজুরি বাবদ গোশত বা চামড়া থেকে কসাইকে কোনো কিছু প্রদান না করি।’
অর্থাৎ কুরবানির চামড়া বিক্রি করে তা যেনো নিজের কাজে খরচ না করা হয়, এ হাদিসে সেদিকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। কারণ যিনি কসাই হিসেবে কাজ করবেন তার মুজুরি যদি চামড়া বিক্রির টাকায় দেয়া হয় তাহলে কুরবানি বৈধ হবে না।
কুরবানির চামড়ার ব্যবহার
আবার কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি না করে নিজেও ব্যবহার করতে পারবে। কুরবানি প্রদানকারী ব্যক্তি ইচ্ছা করলে নিজের কুরবানির চামড়া দাবাগত (লবণ দ্বারা শুকিয়ে) করে তা ব্যবহার করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ইসলামে কোনো বাধা নেই।
কেননা কুরবানির চামড়া সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা কুরবানির পশুর চামড়া দ্বারা নিজেরা উপকৃত হও।’
সুতরাং হাদিসের আলোকে বুঝা যায়, কুরবানির পশুর চামড়া নিজে ব্যবহার করা উত্তম। তবে তা বিক্রি করলে তার মূল্য নিজের কাজে লাগাতে পারবে না। এমনকি চামড়া বা গোশত দ্বারা কসাই’র মজুরিও দিতে পারবে না।
তবে বর্তমান বাজারে চামড়ার মূল্য একেবারে কমে গেছে। নেই বললেই চলে। চামড়া শিল্প এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এক সময় যে চামড়ার দাম ছিলো ১০০ টাকা, ১৫০ টাকা ফুট। বর্তমানে তা হয়ে গেছে মাত্র ৩০ টাকা, ৩২ টাকা ফুট। এহেন মুহূর্তে চামড়া বিক্রি না করে নিজেই ব্যবহার করা অধিক যুক্তিযুক্ত। কেননা এর দ্বারা বিছানার কাজও হবে আবার সারাবছর কুরবানি দেয়া পশুর স্মৃতিচারণও করা যাবে।
এমডব্লিউ/