মুফতি মামুন আব্দুল্লাহ কাসেমি ।।
কুরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত যা সামর্থবান প্রতিটি মুসলমানের উপর আবশ্যক বা ওয়াজিব। কুরবানির জন্য যে সকল পশু যবেহ করা যায় তা হলো- উট, গরু, মহিষ, ভেড়া, দুম্বা ও ছাগল। এগুলো প্রচলিত হাট বাজার থেকে কেনার পাশাপাশি টেকনোলজির যুগে অনলাইনেও কেনা-বেচা হচ্ছে। অনলাইনে কেনাবেচা সহজ হওয়ায় তার প্রতি জনগণের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ই-কমার্স সাইট, কৃষক, খামারি থেকে শুরু করে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হচ্ছে বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানও। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে বসে সহজেই পছন্দের পশু কেনার আগ্রহ অনেকেরই।
এখানে কেনাবেচাটি প্রত্যক্ষভাবে না হয়ে পরোক্ষভাবে তথা হুকমী হয়। নিম্নোক্ত শর্তাবলীর আলোকে লেনদেন করা হলে ইসলামি শরিয়তে এ বেচাকেনা বৈধ হতে পারে: এক,ক্রয়-বিক্রয়ে ইজাব কবুল তথা এক পক্ষের প্রস্তাব আর অপর পক্ষের প্রস্তাব গ্রহণ থাকতে হবে।
দুই, বিক্রীত পশুটি বিক্রেতার মালিকানাধীন থাকতে হবে। তিন, গরু-ছাগল বা বিক্রীত পশুর ছবির সাথে তার সকল বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করতে হবে। পণ্যে কোন দোষক্রটি থাকলে তাও উল্লেখ করতে হবে।
চার, ডেলিভারী চার্জ, সার্ভিস চার্জ ও পরিবহন- খরচ কে বহন করবে তা উল্লেখ করতে হবে। পাঁচ, পশু স্বচক্ষে দেখার পর তা গ্রহণ অথবা ফেরত দানের শর্ত/সুযোগ রাখতে হবে। কারণ, ইন্টারনেটে দেখার সাথে বাস্তব দেখার মিল নাও থাকতে পারে। ফেরত দেয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহককে বিক্রেতার যাতায়াত ও আনুষঙ্গিক খরচ বহন করতে হবে।
ছয়, টাকা পাঠানোর পদ্ধতি ডকুমেন্টারি করা। সাত, পশু হস্তান্তরের তারিখ,সময় ও স্থান উল্লেখ করতে হবে। আট, লেনদেনের মাধ্যম চেক/নগদ উল্লেখ করতে হবে। নয়, ক্রেতা ও বিক্রেতার নিকট একে অপরের মোবাইল, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা সংগ্রহে থাকাটা সমীচীন হবে।
দশ, লেনদেনে সুদের সংশ্লিষ্টতাসহ যেকোন ধরনের প্রতারণা, মিথ্যাচার ও অস্পষ্টতা থাকলে তা শরিয়াহসম্মত হবে না।
দলিল- মুলতাক্বাল আবহুর খ.৩, পৃ.৫০, ফাতাওয়ায়ে শামী খ.৪, পৃ.৫৯৫।
লেখক, পরিচালক: মারকাযুদ্ দিরাসাহ আল ইসলামিয়্যাহ্-ঢাকা ও মুহাদ্দিস জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া- ঢাকা।
-এটি