মাওলানা নাঈম আহমদ।।
সমকামিতা-এর মত অসৎ কর্ম যখন সংঘটিত হয়, তখন পৃথিবী প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। স্থানচ্যুত হয়ে যায় পর্বতমালা। নেমে আসে আসমানি গজব। লুত আ.-এর সম্প্রদায় সমকামিতায় লিপ্ত ছিল। এ অসৎ কর্মের জন্য যে ভয়াবহ শাস্তি আল্লাহ তা'আলা তাদের দিয়েছেন, তা অন্য কোনো সম্প্রদায়কে দেননি। তাদের করে দেওয়া হয়েছিল অন্ধ। মুখমণ্ডল করে দেওয়া হয়েছিল কালো। হযরত জিবরাঈল আ.-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তাদের জনপদকে উলটে দেওয়ার জন্য। মাটি-চাপা দিয়ে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য। তারপর সেখানে পাথরবৃষ্টি বর্ষণ করার জন্য।
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন- "আমি আমার উম্মতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আশঙ্কা করি লুত সম্প্রদায়ের কুকর্মের ব্যাপারে"! (জামে তিরমিযী: ১৪৫৭)
আরেক হাদীসে তিনি বলেছেন- "যে ব্যক্তি লুত সম্প্রদায়ের অপকর্মে লিপ্ত হয়, তার উপর আল্লাহর লানত। যে ব্যক্তি লুত সম্প্রদায়ের অপকর্মে লিপ্ত হয়, তার উপর আল্লাহর লানত। যে ব্যক্তি লুত সম্প্রদায়ের অপকর্মে লিপ্ত হয়, তার উপর আল্লাহর লানত"। [সুনানে হিব্বান]
অন্যত্র বলেন- "লুত সম্প্রদায়ের অপকর্মে তোমরা যাকে দেখতে পাবে, তাকে ও যার সঙ্গে সে এ কাজ করেছে উভয়কে হত্যা করো"। (মুসনাদে আহমাদ)
সাহাবায়ে কেরাম সমকামীদের পুড়িয়ে শাস্তি দিতেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন- "সমকামী তাওবা ছাড়া মারা গেলে কবরে শুকরে পরিণত হবে"।
লুত আ.-এর সম্প্রদায়ের ওপর এ শাস্তিকে আল্লাহ রাব্বুল আ'লামীন ভূপৃষ্ঠবাসীর জন্য নিদর্শন, মুত্তাকীদের জন্য শিক্ষণীয় এবং অপরাধীদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক দণ্ড বানিয়েছেন। নিশ্চয় এতে রয়েছে পর্যবেক্ষণ-ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য নিদর্শন। এ বিপদ যখন তাদের গ্রাস করে তখন তারা ছিল ঘুমন্ত জগতের বাসিন্দা। তাদের এ অস্থায়ী ঘুম রূপ নিল স্থায়ীতে। জীবনের কোনো অর্জনই তখন তাদের কোনো কাজে এল না। নিমিষেই চলে গেল সব ভোগ-বিলাস।
তখন, এ অসৎ কর্মে লিপ্ত ব্যক্তির অনুশোচন! কোনো কাজে আসবে না। কান্না! কোনো কাজে আসবে না। ঝলসানো হবে জাহান্নামের আগুনে। তাদের নাক-মুখ দিয়ে বের হবে জাহান্নামের আগুন! তাদের বাধ্য করা হবে জাহান্নামের দুর্গন্ধযুক্ত পানীয় পান করতে। তাদের বলা হবে, স্বাদ আস্বাদন করো সেটার, যেটা পার্থিব জগতে তোমরা অর্জন করেছিলে। জাহান্নামে প্রবেশ করো! তোমাদেরকে তোমাদের কর্মফল আজ ভোগ করতে হবে।
লেখক: তরুণ আলেম। ইউনিয়ন: ১০ নং দেবপাড়া নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট।
-এটি