আওয়ার ইসলাম: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যত মানুষ না মৃত্যুবরণ করবে, তার চেয়ে বেশি মানুষ মারা যাবে ক্ষুধার যন্ত্রণায় বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর করোনাভাইরাস মহামারিজনিত বিরূপ প্রভাবের কারণে সৃষ্ট খাদ্যের সংকটে এসব লোক মারা যাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লকডাউনের প্রভাবের পরে ব্যাপক বেকারত্ব, আয় হ্রাস, খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত এবং মানবিক সহায়তার হ্রাস ঘটার ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হবে।
গত বছর ৮২১ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে, যার মধ্যে ১৪৯ মিলিয়ন মানুষ সংকট স্তরের ক্ষুধা বা এর চেয়েও খারাপ সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল। তবে এখন অর্থনীতির নাটকীয় মন্দা এবং চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ জনগণের বেকারত্বের কারণ। ‘দ্য হাঙ্গার ভাইরাস’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে এই শঙ্কার চিত্র তুলে ধরেছে অক্সফাম।
প্রতিবেদনে আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং দক্ষিণ সুদান সহ বিশ্বের দশটি ক্ষুধার্ত ‘হটস্পটস’ প্রকাশিত হয়েছে। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিলের মতো মধ্যম আয়ের দেশগুলোতেও লাখ লাখ মানুষের না খেয়ে থাকার মাত্রা বাড়ছে।
চার সন্তানের এক মা এবং ইয়েমেনের হেয়ার সেলুনের মালিক সানা এই দাতব্য সংস্থাটিকে বলেছেন, আমি গত কয়েক মাস ধরে আমার সেলুনে গ্রাহক পাচ্ছি না, আমি ব্যয় এবং ভাড়া দু'মাস ধরে কমিয়ে দিচ্ছি এবং ক্রেডিটে খাবার কিনছি। কি করতে হবে আমি তা জানি না।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইয়েমেন বিশ্বের সবচেয়ে তীব্র মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে, যেখানে জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ ক্ষুধার্ত এবং দুই মিলিয়নেরও বেশি শিশু মধ্যম বা মারাত্মক অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভুগছে।
অক্সফাম জিবির প্রধান নির্বাহী ড্যানি শ্রীস্কান্দারাজাহ বলেন, করোনার প্রভাবে বিশ্বের লাখো দরিদ্র মানুষকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের গভীরে ঠেলে দিয়েছে। সরকারগুলো এখন জাতিসংঘ করোনা আবেদন তহবিলে অর্থায়ন করে এবং মহামারি মোকাবিলায় সংঘাতের অবসান ঘটাতে জীবন বাঁচাতে পারে।
এর আগে গত এপ্রিলে অক্সফাম জানায়, করোনা মহামারি বিশ্বজুড়ে ৫০ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যের মুখে ঠেলে দিতে পারে।
-এটি