আওয়ার ইসলাম: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আবার অভিযান শুরু করেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।
বিদ্রোহী আরাকান বাহিনীর বিরুদ্ধে এ অভিযানের জন্য স্থানীয় প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দাকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।
দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের এশিয়াবিষয়ক মন্ত্রী নিগেল অ্যাডামস মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস, সংক্ষেপে আইসিজে) নির্দেশনা মেনে চলার এবং মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে বেসামরিক জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
২০১৬ ও ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্য থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞসহ গুরুতর অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ এনেছেন। জেনোসাইডবিরোধী সনদ লঙ্ঘনের অভিযোগে আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে আইসিজে মিয়ানমারকে জেনোসাইডবিরোধী সনদ মেনে চলার এবং এটি প্রতিপালন সম্পর্কিত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন।
রেডিও ফ্রি এশিয়ার (আরএফএ) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই জোরদারের অংশ হিসেবে মিয়ানমারের সেনারা প্রায় ১০ হাজার গ্রামবাসীকে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর ফলে ওই রাজ্যে ১৮ মাস ধরে চলা যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে বাস্তুচ্যুতি আরো বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে মিয়ানমার বাহিনীর অভিযানকে ক্লিয়ারেন্স (নির্মূল) অভিযান হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল।
এবার বিদ্রোহী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যে অভিযান চালানো হচ্ছে তারও নাম দেওয়া হয়েছে ক্লিয়ারেন্স অভিযান। স্থানীয় এক বাসিন্দা আরএফএকে জানিয়েছেন, কিয়াউকতান গ্রামের ১৭টি সম্প্রদায়ের সব সদস্যকে এলাকা ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর ওই দেশটিতে মাত্র চার থেকে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা অবশিষ্ট আছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ ও চাপ সত্ত্বেও মিয়ানমার সরকার এখনো তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করছেন না। তাদের চলাফেরায়ও নানা ধরনের বিধি-নিষেধ আছে। এমন পরিস্থিতিতে এখনো কিছুদিন পর পর রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্য ছেড়ে বাংলাদেশে বা অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। এ ছাড়া সংঘাত ও অস্থিরতার কারণেও রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ বোধ করে না। এই সুযোগে মানবপাচারকারী চক্রগুলোও সক্রিয় রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ নতুন করে রোহিঙ্গা না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে মালয়েশিয়াও গত শুক্রবার বলেছে, তারাও আর নতুন করে রোহিঙ্গা নিতে পারবে না।
-এটি