আওয়ার ইসলাম: ভাগ্য ফেরানোর আশায় মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় ইউরোপের ভিসা। এমন চটকদার ভাষায় প্রলোভন দেখান দালালেরা। এরপর বাকি টাকা লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর।
কিন্তু ইউরোপে ঢুকতে সমুদ্র পাড়ি দেয়ার বিষয়টি গোপন রাখে তারা। কোন রকমে লিবিয়ায় পৌঁছলেই শুরু হয় নির্যাতন, পরিবারকে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা দিতে বাধ্য করে দালালেরা।
মুন্সিগঞ্জের মোহাম্মদ রুবেল। ২০১৬ সালে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে কাতার, তুরস্ক হয়ে গিয়েছিলেন লিবিয়াতে। সে পর্যন্ত যেতে ভাগে ভাগে দিতে হয়েছে সাড়ে আট লাখ টাকা। এরপর দালালেরা আরো চার লাখ টাকা দাবি করে। ২৬ দিন ক্যাম্পে নির্যাতনও করা হয় তাকে। শেষ পর্যন্ত পালিয়ে বাঁচে সে।
রুবেলের মতো সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব শরীয়তপুরের আল আমিনও। টাকা না দেয়ায় তিন মাস লিবিয়ায় নির্যাতন চালায় তার ওপর।
পাসপোর্টের সাথে ৫ হাজার টাকা দিলেই মেলে দুবাই, কাতার বা তুরস্কের ভিসা। সেখান থেকেই পাওয়া যায় লিবিয়ার ভিসা। পৌঁছেই দিতে হয় ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। কিন্তু এসবের কিছুই আগে থেকে জানায় না দালালেরা।
এসব অসচ্ছ্বল মানুষেরা টাকা দিতে না পারলে লিবিয়ার ক্যাম্পেই শুরু হয় নির্যাতন। বাংলাদেশে পরিবারকে দেখানো হয় অত্যাচারের ভিডিও। যারা টাকা দিতে পারেন রওনা হন ইতালিতে। অন্যদের ভাগ্যে জোটে মৃত্যু।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবপাচার ঠেকাতে দালালদের তালিকা তৈরি করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া, কেউ যাতে প্রতারণার ফাঁদে পা না দেয় সেজন্য সচেতনও হতে হবে।
চক্রগুলোর অপতৎপরতা ঠেকাতে লিবিয়া সরকারের সাথেও যোগাযোগ বাড়ানোর তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। ভাগ্য ফেরানোর আশায় অনেকেই বিদেশ পাড়ি জমান। কিন্তু দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারান, জীবনও দিতে হয় অনেককে। এতে শুধু ঐ পরিবারটিরই ক্ষতি হচ্ছে না বিশ্বব্যাপী দুর্নাম হচ্ছে বাংলাদেশের।
-এটি