আওয়ার ইসলাম: চট্টগ্রামে করোনায় ও উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া দুইশ'র বেশি লাশ দাফনের পর এবার ৭০ শয্যা বিশিষ্টি একটি করোনা হাসপাতাল তৈরি করছে আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন। চট্টগ্রামের বিশিষ্ট আলেম আল্লামা শাহ জমিরুদ্দিন রহ.-এর তিন ছেলে সংস্থাটি পরিচালনা করছেন।
আল্লামা শাহ জমিরুদ্দিন রহ.-এর তিন ছেলে - মাওলানা হেলাল উদ্দিন জমির উদ্দিন, মাওলানা শিহাব উদ্দিন ও মাওলানা ফরিদ উদ্দিন বিন জমির।
চট্টগ্রামের হালিশহরে একটি ছয়তলা ভবনে তৈরি করা হয়েছে 'আল মানাহিল নার্চার হাসপাতাল'। হাসপাতালটিতে বসানো হয়েছে ১০টি আইসিইউ বেডও। তার মধ্যে থাকছে পাঁচটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা। ছয়তলা ভবনজুড়েই রয়েছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম। হালিশহরের বি-ব্লকের চৌধুরীপাড়ায় হাসপাতালটি অবস্থিত। হাসপাতালটির নিচের তলায় থাকছে রিসেপশন, জরুরি বিভাগ ও অবজারভেশন ওয়ার্ড। বাকি পাঁচটি তলায় বসানো হয়েছে ৭০টি শয্যা। আগামী সপ্তাহে হাসপাতালের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আল মানাহিল নার্চার হাসপাতাল তৈরির অন্যতম উদ্যোক্তা মাওলানা ফরিদ উদ্দিন বলেন, নগরীর হালিশহরে যে ভবনটিতে হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে তার মালিক নাসরিন আক্তার আমেরিকা প্রবাসী, দানশীল মানুষ। তিনি বহু আগে স্থানীয়দের দাতব্য সেবা দেয়ার জন্য ভবনটি ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু তিনি প্রবাসে থাকায় নিয়মিত মানুষকে সেবা দিতে না পারায় ভবনটিকে হাসপাতাল তৈরিতে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন। চট্টগ্রামে এখন করোনায় লণ্ডভণ্ড অবস্থা তৈরি হওয়ায় আমরা এটিকে করোনা চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল হিসেবে তৈরি করেছি।
তিনি জানান, লাশ পরিবহন ও দাফন, রোগী বহন, নমুনা সংগ্রহসহ করোনাকালীন সেবা প্রদানে আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চারটি গাড়ি ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় কিছু প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়ায় হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। কর্তৃপক্ষ আশা করছে আগামী সপ্তাহে রোগী ভর্তি ও সেবা প্রদান শুরু করা যাবে
'আল মানাহিল নার্চার হাসপাতাল'-এর পরিচালক মাওলানা হেলাল উদ্দিন জমির উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে অ্যাম্বুলেন্সে ও পথেই মারা যাচ্ছেন। তাই করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে আমরা এগিয়ে এসেছি। সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে আমরা আরও আইসিইউ বেড স্থাপন করতে প্রস্তুত রয়েছি। প্রয়াত বাবা আল্লামা জমির উদ্দিন নানুপুরী আমাদের মানবতার কল্যাণে কাজ করার শিক্ষা দিয়ে গেছেন।
উল্লেখ্য, আল্লামা শাহ জমিরুদ্দিন রহ. ১৯৯৮ সালে আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে নানামুখী সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। গভীর নলকূপ স্থাপন, দুর্যোগকালে ত্রাণ বিতরণ এবং রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে সেবা ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা এর অন্যতম।
-এএ