মুজাহিদে মিল্লাত মুফতি আমিনী রহমতুল্লাহি আলাইহির ইসলাহী বয়ান থেকে
মুফতি সাইফুল ইসলাম মাদানী
মুজাহিদে মিল্লাত মুফতি আমিনী সাহেবের একটি ইসলাহী মজলিসে অহংকার বিষয়ের আলোচনা ছিল। আলোচনায় প্রসঙ্গক্রমে বলেছিলেন,
শাইখুল হাদীস যাকারিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তার আত্মজীবনী আপবীতী গ্রন্থে লিখেন, দেওবন্দের ফিতনার সময় সাহারানপুরের দপ্তরে বসে কয়েকজন ওস্তাদ গর্ব করে বলছিলেন, "আমাদের মাদ্রাসা ফিতনা-ফাসাদ মুক্ত। অমুক অমুক মাদ্রাসায় ফেতনা চলছে।
কথাগুলো শুনে শাইখুল হাদীস যাকারিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি এই অহংকারযুক্ত মনোভাব ও অভিব্যক্তির কারণে আশঙ্কা করছিলেন, আল্লাহ না করুন,হয়তো আমাদের সাহারানপুর মাদ্রাসাও বড় কোন বিপদে পড়তে পারে।
শাইখুল হাদীস যাকারিয়া রহমাতুল্লাহ আলাইহি লিখেন, মাত্র এক বছর পার হতেই দারুল উলুম দেওবন্দের দুর্ঘটনার ন্যায় সাহারানপুরে এমন একটি বড় ধরনের ফেতনা ঘটনা ঘটে গেল, যা কল্পনার বাইরে ছিল। দারুল উলুম দেওবন্দের দুর্ঘটনার ফলাফল যা হয়েছিল, এক বছর পর সাহারানপুর মাদ্রাসায় সংগঠিত দুর্ঘটনায় পর প্রায় একই ধরনের ফলাফল হয়েছিল।
(মাজাহিরুল উলুম সাহারানপুর মাদ্রাসা দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠার ছয় মাস পর পর দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতাবৃন্দের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান।) অতএব, আল্লাহ তাআলার কাছে রহমত নিরাপত্তা এবং ঐক্যের জন্য দোয়া করতে থাকা সময়ের দাবি। মাদ্রাসার সুঅবস্থা নিয়ে অহংকার না করা উচিত।
এই ঘটনা বর্ণনা করার পর মুফতি আমিনী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, অহংকার সব সময়ই খারাপ। এমনকি দ্বীনি প্রতিষ্ঠান নিয়েও অহংকার মারাত্মক নিন্দনীয়। আমরা যেন কেউ নিজেদের প্রতিষ্ঠানের সু অবস্থা নিয়ে অহংকার না করি। এমনকি শুকরিয়ার ভাষায়ও যেন অহংকার প্রকাশ না পায়। মোটকথা কোনোভাবেই অহংকার করার সুযোগ নেই।
কোন মাদ্রাসায় ফিতনা সৃষ্টি হলে, সেখান থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত যে, কি কি কারণে সেখানে ফেতনা সংঘটিত হলো। যদি সেসব কারণ নিজেদের মাঝে থাকে, তাহলে তা সংশোধন করে নেয়া।
মাদ্রাসাগুলোকে ফিতনা মুক্ত রাখতে প্রথমত, সবচেয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে, মাদ্রাসার শিক্ষক বৃন্দ ও কমিটির সদস্য বৃন্দকে। মাদ্রাসাকে ফিতনা মুক্ত রাখতে হলে সকলেই আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে সচেষ্ট, স্বার্থহীন, আমানতদার, কল্যাণকামী,বিনয়ী ও মাদ্রাসার নিয়ম কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, দেওবন্দী আদর্শের কওমি মাদ্রাসাগুলো এই উপমহাদেশে ইসলামের হেফাজতের জন্য দুর্গ স্বরূপ। এসব মাদ্রাসার জন্য ক্ষতিকর হয়, এমন কোনো ভূমিকা রাখা মানে, ইসলামের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখা।এসব মাদ্রাসার কোন ক্ষতি করলে এর ভয়াবহ পরিণতি দুনিয়া ও আখেরাতে ভোগ করতে হবে।
-এটি