সুফিয়ান ফারাবী।।
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট>
করোনা কালে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৃতি যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। করোনাভাইরাসে শিক্ষার্থীদের পদচারণা না থাকায় বেশ কিছুদিন ধরে ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা।
জনশূন্য ক্যম্পাসে নির্জনতার সুবাদে জেগে উঠেছে প্রকৃতি। খোলা আকাশে ঝাঁকে ঝাঁকে ডানা মেলে উড়ছে নানা রঙের বাহারি প্রজাতির পাখি। বসন্তের পর ডালপালা মেলতে শুরু করেছে বৃক্ষরাজিরা। নিরব জলাশয়ে পদ্ম আর শাপলার মাঝে পাখিদের দল বেধে উড়াউড়ি মনের ভেতর তৈরি করে অন্যরকম আবেশ।
দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ থাকায় এবছর ক্যাম্পাসে দর্শনার্থীরা বসন্তের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেনি। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে গৃহবন্দি সাধারণ মানুষ।
এই সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয় সেজেছে ভিন্নরূপে। গাছের আগায় ফুটেছে রক্তরঙা জ্বলন্ত কৃষ্ণচূড়া। ক্ষণে ক্ষণে আলোকোজ্জ্বল হয়ে উঠছে সূর্যের কিরণে।
বসন্তের এই মৌসুমে গাছে গাছে নতুন পাতা। বাতাসে সো সো শব্দ। মুক্ত আকাশে উড়ে উড়ে গান গাইছে শতশত বাহারি রঙের পাখি। ছন্দে ছন্দে গান গাইছে তারা।
দীর্ঘদিন মানুষের পদচারণা না থাকায় বৃষ্টিস্নানে ধুলোবালিমুক্ত পুরো ক্যাম্পাস এরিয়া এখন নিস্তব্ধ। দু কিলোমিটার রাস্তার এপাশ থেকে ওপাশ সহসায় দেখা যায় না। যেন এক জনমানব শূন্য ধূসর মরুভূমি। ধুলোবালি না উড়ায় পুকুরেও বইছে স্বচ্ছ পানি।
স্বচ্ছ লেকের মাঝে ফুটে আছে শতশত পদ্মফুল। যদিও হালকা গোলাপি এই ফুলের রোমাঞ্চকর অনুভূতি নিতে এখন আর কেউ আসতে পারে না। পুকুরে ডানা মেলতে শুরু করেছে গোলাপি রঙের শাপলা।
অন্যদিকে আম-কাঁঠালের এই মৌসুমে ক্যাম্পাসের গাছে গাছে ঝুলছে দেশি কাঁঠাল, থোকায় থোকায় ঝুলছে আম। বৈশাখের প্রচণ্ড দাবদাহে পাকতে শুরু করেছে মৌসুমী ফলগুলো। ইতিমধ্যেই পেকে লাল হয়ে গেছে দেশীয় সুমিষ্ট ফল জামরুল।
প্রকৃতির এমন পরিবর্তনকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় স্বাভাবিক সময়েও যদি আমরা সচেতন হই, তাহলে সর্বদায় বিরাজ করবে প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য। সঠিক পরিচর্যা ও প্রকৃতির উপর নির্যাতন বন্ধ হলে ধীরে ধীরে প্রকৃতি ফিরে যাবে তার আপন রূপে।
-এটি