আওয়ার ইসলাম: সাদাকাতুল ফিতর ইসলামি শরিয়তে ওয়াজিব একটি ইবাদত। সাদাকাতুল ফিতরের উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈদের খুশিতে গরিব শ্রেণির লোককেও শামিল করে নেয়া। কেননা ঈদের নামাজের আগেই যখন একজন অভাব-অনাহারি লোক কিছু পায়, তখন তা আনন্দের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিক বিবেচনা করলে সাদাকাতুল ফিতর হচ্ছে রোজার জাকাত। জাকাত যেমন সম্পদকে পবিত্র করে, তেমনই ফিতরাও রোজাকে পবিত্র করে।
মানুষ ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়, রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতির ক্ষতিপূরণ করে সাদাকাতুল ফিতর। মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব। ঈদের দিন সুবহে সাদিক থেকে ফিতরা ওয়াজিব হয়। কাজেই সুবহে সাদিকের আগে কেউ মারা গেলে তার ফিতরা দেয়া ওয়াজিব নয়। গৃহকর্তার কোনো সন্তান যদি সুবহে সাদিকের আগে জন্মগ্রহণ করে, তবে তার ফিতরা দিতে হবে। এরপর জন্মালে ফিতরা দিতে হবে না। এ হুকুম সুবহে সাদিকের পর কেউ মুসলমান হলে তার ওপরও। গম, গমের আটা, জব, জবের আটা এবং খেজুর ও কিশমিশ দ্বারা ফিতরা আদায় করা যায়। গম বা গমের আটা দ্বারা ফিতরা আদায় করলে গম অর্ধ সা’ (১ কেজি ৬৬০ গ্রাম) এবং জব বা জবের আটা কিংবা খেজুর দ্বারা আদায় করলে এক সা’ (৩ কেজি ৩২০ গ্রাম) দিতে হবে। রুটি, চাল বা অন্য খাদ্যদ্রব্য দিয়ে ফিতরা দিতে হলে মূল্য হিসেবে দিতে হবে। কিশমিশ দিয়ে ফিতরা আদায় করলেও এক সা’ দিতে হবে।
দুর্ভিক্ষের সময় খাদ্যদ্রব্য দ্বারা ফিতরা আদায় করা উত্তম। অন্যান্য সময় মূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা উত্তম। ঈদুল ফিতরের আগে ফিতরা আদায় করা জায়েজ। ঈদুল ফিতরের দিন আদায় না করলেও পরে তা আদায় করতে হবে। ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার আগে ফিতরা আদায় করা মুস্তাহাব। নিজের এবং নিজের নাবালেগ সন্তানের পক্ষ থেকে সাদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। স্ত্রী এবং বালেগ সন্তানেরা ফিতরা নিজেরাই আদায় করবে। স্বামী বা পিতার ওপর স্ত্রী-সন্তানদের ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়। তবে দিয়ে দিলে আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু পরিবারভুক্ত নয়, এমন লোকের পক্ষ থেকে তার অনুমতি ছাড়া ফিতরা দিলে আদায় হবে না।
কোনো ব্যক্তির ওপর তার পিতামাতার, ছোট ভাই বোন ও নিকটাত্মীয়ের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়। এক ব্যক্তির ফিতরা এক মিসকিনকে দেয়া উত্তম। তবে একাধিক ব্যক্তিকেও দেয়া জায়েজ। [ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : খণ্ড- ১, পৃষ্ঠা- ১৯২, কানযুদ্দাকায়িক : পৃষ্ঠা- ২৪]
-এটি