তানভির কামাল।।
আজ ঐতিহাসিক বদর দিবস৷ আবু জাহেলের সজ্জিত এক হাজার সৈন্য বাহিনীর সামনে যখন অনাকাঙ্খিত ভাবে মুখোমুখি হয়ে গেল মুসলমান কাফেলা৷ ঠিক সে সময়ের করণীয় বিষয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরাম থেকে পরামর্শ নিচ্ছিলেন যে, কী করবো? কি করা যায়? আমাদের কর্তব্য কী এখন? মদিনায় ফিরে যাব? নাকি যুদ্ধ করবো?
নিরস্ত্র, দুর্বল সাহাবায়ে কেরাম সেদিন নবীজির সামনে আবেগ উচ্ছ্বাসের যেই নজরানা পেশ করেছিলেন,ইতিহাসের পাতায় কেয়ামত পর্যন্ত তা জ্বলজ্বল করবে৷
সেই পরামর্শ সভায় নাযুক মূহুর্তে নবীজির সাহাবী হযরত মিকদাদ ইবনে আসওয়াদ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু যে ভাষণ দিয়েছিলেন, মুসলিম উম্মাহর ঘুমন্ত চেতনাকে জাগ্রত করার জন্য সেই একটি ভাষণ ই যথেষ্ট৷
হযরত মিকদাদ ইবনে আসওয়াদ রাযি, সেদিন তাঁর আবেগময় ভাষণে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন একজন সত্যিকারের মর্দে-মুমিন হিসেবে৷ (বস্তুত সকল সাহাবাই এমন ছিলেন)
ভাষণে তিনি রাসূল সা. কে আশ্বাস দান করে বলেন, “ইয়া রাসূলুল্লাহ, আল্লাহ আপনাকে যে নির্দেশ দিয়েছেন তা বাস্তবায়নে এগিয়ে চলুন। আমরা আপনার সাথে আছি। আল্লাহর কসম, বনী-ইসরাইলরা যেমনভাবে তাদের নবী মুসা আলাইহিস সালামকে বলেছিল তুমি ও তোমার রব দু’জন যাও এবং যুদ্ধ কর, আর আমরা এখানে বসে থাকি – আমরা আপনাকে তেমন কথা বলবো না।
বরং আমরা আপনাকে বলবোঃ আপনি ও আপনার রব দু’জন যান ও তাদের সাথে যুদ্ধ করুন আমরাও আপনাদের সাথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো। যিনি সত্যসহ আপনাকে পাঠিয়েছেন সেই সত্তার কসম, আপনি যদি আমাদের ‘বারকুল গিমাদ’ পর্যন্ত নিয়ে যান, আমরা আপনার সাথে যাব এবং আপনার শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো। আমরা আপনার ডানে, বামে, সামনে ও পিছনে সর্বদিক থেকে যুদ্ধ করবো –যতক্ষণ না আল্লাহ আপনাকে বিজয় দান করেন।” (রিজালুন হাওলার রাসূল)
তাঁর এই আবেগময় ভাষণ শুনে খুশীতে রাসূলুল্লাহর সা. চেহারা মুবারক উজ্জ্বল হয়ে ওঠেছিল। অন্যান্য সাহাবারা তাঁর ভাষণ শুনে তাঁর প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েছিলেন এই আফসোসে, হায়! আমি যদি তাঁর মতো আবেগপূর্ণ ভাষণ দিয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রিয় হয়ে যেতে পারতাম!
লেখক: শিক্ষক জামিয়া আশরাফিয়া মহিউদ্দীন নগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া৷
-এটি