মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম।।
মানুষ যখন দুনিয়াবী কাজ-কর্মে লিপ্ত হতে থাকে তখন সে তার প্রকৃত উদ্দেশ্য কে ভুলতে বসে। দুনিয়ার জাগতিক চাকচিক্য দেখে ধীরে ধীরে সে যখন তার ধান্দায় লেগে যায় তখন তার অন্তরে গাফলতের আবরণ পড়ে যায়, ফলে সে দুনিয়ার কাজ-কর্ম এবং তার অনুসন্ধানের মাঝে হারিয়ে যায়। যার দরুন সে তার প্রকৃত মালিক আল্লাহকে ভুলে যায় এবং তার অনুসরণ ছেড়ে দিয়ে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে শুরু করে।
মহান আল্লাহ এ সবকিছুই জানেন এবং বুঝেন এজন্যই তো তিনি এই গাফলাতকে দূর করার জন্য কিছু বিশেষ সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যার মাধ্যমে মানুষ তার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে নিতে পারে এবং স্বীয় কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে পারে।
এই বিশেষ সময়ের মধ্য থেকে একটি সময় হলো পবিত্র রমজান মাস, বছরের এগারটি মাস যখন আমরা ব্যবস-বাণিজ্য, চাকরি-বাকরি এবং খাওয়া-পরা,হাসি-আনন্দের মাঝে কাটিয়ে দেই তখন এর ফলে আমাদের অন্তরের উপর গাফলতের একটা পর্দা পড়ে যায়।
সেজন্যই আল্লাহপাক একটি মাস কে এ কাজের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন যে,এই মাসে তোমরা তোমাদের সৃষ্টির আসল লক্ষ্যের দিকে তথা মহান আল্লাহর ইবাদতের দিকে ফিরে আসো যার জন্য তিনি তোমাদেরকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন এবং যার জন্য তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ তা'য়ালা পবিত্র কালামে হাকিমে বলেছেন, ("ما خلقت الجن والانس الا ليعبدون") অর্থাৎ আমি মানুষ এবং জিন জাতিকে একমাত্র আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি। (সুরা যারিয়াত-৫৬)
সুতরাং আসুন এই মাসটি তে আমরা আল্লাহর ইবাদতে নিমগ্ন হয়ে, বিগত এগার মাসে আমাদের থেকে যেসব গুনাহ প্রকাশিত হয়েছে সেগুলোর জন্য ক্ষমা চেয়ে ক্ষমা করিয়ে নেই এবং অন্তরের কর্মক্ষমতার ওপরে যে সব আবরণ পড়ে গেছে সেগুলো ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে নেই।
কেননা এ মাসটি তো ক্ষমা প্রার্থনার মাস! এ মাসটি তো রহমত প্রাপ্তির মাস! এ মাসটি তো জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের মাস! তাই আবারো আসুন আমরা এই মাসকে যথাযথ ভাবে কাজে লাগিয়ে এর প্রকৃত ফলাফল অর্জন করে নেই।
মহান আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলের গুনাহ গুলোকে তাঁর রহমতের আবরণ দ্বারা ঢেকে নিয়ে, তার ক্ষমার ছায়া তলে আশ্রয় দান করে, তার নাজাতের ফয়সালা করে দিন।
-এটি