সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ, প্রতিবাদ জানালেন শায়খ আহমাদুল্লাহ বিবাহ একটি ইবাদত, এর পবিত্রতা রক্ষা করা জরুরি নারী অধিকার কমিশনের সুপারিশে আলেম প্রজন্ম-২৪-এর আপত্তি  জুলাই-আগস্টের ত্যাগের পরও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ পাইনি: মির্জা ফখরুল নারীবিষয়ক সুপারিশগুলো কোরআন-হাদিসের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: জামায়াত আমির ‘১৬ বছরের জঞ্জাল দূর না করে নির্বাচন দিলে সমস্যা সমাধান হবে না’  প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা সরকারি নিবন্ধন পেল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কলরব’ ‘সিরাহ মিউজিয়াম’ চালু করছেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী মহাসমাবেশ সফল করতে যেসব কর্মসূচি নিয়েছে হেফাজত

তারাবির নামাজের মাঝে সম্মিলিত দোয়া ও মুনাজাতের বিধান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি নাজমুল হুদা নোমানী ।।

তারাবি নামাজে প্রতি চার রাকাত পর মুনাযাত করা বা বিশ রাকাত শেষে মুনাজাত করা,আর তারাবীর মুনাজাতের বিখ্যাত দোয়া ইয়া মুজিরু ইয়া মুজিরু" মুনাজাতে পড়া,বা চার রাকাত পরে মাসুর এবং গায়রে মাসুর, কুরআন- সুন্নাহ সম্মত যে কোন দোয়া দুরুদ পড়া বা একটি দোয়াকে নির্দিষ্ট করে পড়া উসুলুশ শরিয়া এবং ফিকহুশ শরিয়ার আলোকে সমপুর্ণ শরিয়ত সম্মত,এসব আমল খেলাফে সুন্নাহও নয় এবং বিদআতও নয়।

তবে গায়রে মাসুর দোয়া- দরুদের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। ১। উহাকে মাসুর দোয়া- দরুদ মনে করা যাবেনা। ২। উহার কোন ফযিলত বলা যাবেনা। ৩। উহাকে মুস্তাহাব,সুন্নত, মনে করা যাবেনা।

৪। উহাকে ওয়াজিব তথা কারো জন্য বাধ্যতামুলক মনে করা যাবেনা। ৫। উহাকে অন্য গায়রে মাসুর দোয়া- দরুদের তুলনায় উত্তম মনে করা যাবেনা। ৬। উহা কেহ আমল না করার দরুন বা না পড়ার কারণে তাকে খারাপ মনে করা যাবেনা। ৭। উহা আমল না করার দরুন বা না পড়ার কারণে কাউকে তিরস্কার, ভর্ৎসনা,গালমন্দ,সম্পর্ক নষ্ট করা যাবেনা

এ বিষয়গুলো খেয়াল করে যদি কেহ মাসুর বা কুরআন- সুন্নাহ সম্মত গায়রে মাসুর দোয়া- দরুদ নিয়মিত আমল করে, তাহলে উহা তার ইস্তেকামাতের প্রমাণ, মনে রাখতে হবে কোন আমলের উপর দাওয়াম হওয়াকে ইস্তেকামাত বলে, দাওয়াম কখনো ওয়াজিব বুঝায়না যেমন ওযুতে নাকে- মুখে সব সময় পানি দেয়া বা কান,গলা,ঘাড় সব সময় মাসেহ করা আমলের ইস্তেকামাম্তের দলিল৷

কোন দিন ওযুতে এ আমলগুলো না ছাড়ার কারণে বা সব সময় ওযুতে এ কাজগুলো করার কারণে ঐ আমলগুলো ওয়াজিব বা জরুরী হিসেবে প্রমাণিত হয়না।

তবে উল্লেখিত ৭ টি বিষয়ের কোন একটি লংঘন হলে তখন এটা সাব্যস্ত হবে যে আপনি ঐ আমলগুলোকে জরুরী তথা ওয়াজিব মনে করছেন.আর তখন আপনার আমলটি বিদাত বলে গণ্য হবে।

কারণ শরিয়তে যে আমলটি ওয়াজিব নয়,তাকে ওয়াজিবের মাকাম দিলে বা ওয়াজিব মনে করলে,বা ঐ আমলের সাথে ওয়াজিবের মত আচরণ করলে তা বিদাত বসে গণ্য হয়৷

আবার উসুল ও ফিকহ বিবর্জিত সহিহ হাদিস বা সহিহ আকিদা বা সহিহ আমল বা সুন্নত কায়েমের নামে, বা বিদাত উৎখাতের নামে।

অথবা কুরআন-সুন্নাহ- উসুলে শরিয়া- ফিকহে শরিয়ার দলিল ছাড়াই যহিরি আলফাযের সরল তরজমার ভিত্তিতে সমাজে প্রতিষ্ঠিত শরিয়ত সম্মত কোন আমলকে খেলাফে সুন্নত বা বিদাত বা নাজায়েয বলাটাও অনেক বড় ফিতনা৷এসবের মাধ্যমে সমাজে বিশৃংখলার সৃষ্টি করা,মুসলিম জাতির ঐক্য নষ্ট করা,মুসলিম ভ্রাতৃত্বে চির ধরানো,কালিমার ভিত্তিতে গঠিত ইসলামের জাতীয় ঐক্যসংহতিতে বিভক্তি- ফাটল সৃষ্টি করা।

ধর্মীয় অংগনে এক মুসলিমকে অন্য মুসলিমের বিরুদ্ধে উসকিয়ে দেয়া বা একজনকে অন্যজনের বিপরীত মুখোমুখি দাড় করিয়ে দেয়া,সাধারণ জনগণের ধর্মীয় আমলে অরাজকতা তৈরি করা,সন্দেহের সৃষ্টি করা,আমলের প্রতি নিরুৎসাহিত করা,বা সমাজে প্রতিষ্ঠিত শরিয়ত সম্মত আমলকে বন্ধ করে দেয়া শিরকের পর সর্বনিকৃষ্ট জঘন্যতম ফিতনা, যা অকাট্য হারাম।

ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ.বলেন, যে বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সা.এর আদেশও নেই,আবার নিষেধও নেই, সে সমস্ত আমল বৈধ রুপে গণ্য হবে যতক্ষন পর্যন্ত উহার নিষিদ্ধতা বা সাংঘর্ষিক কোন কিছু কুরআন- হাদিসে পাওয়া না যায়।

আল্লাহ আমাদের সকলকে কুরআন - সুন্নাহর সহিহ ফাহম ও ফিকহ দান করুন,এবং ধর্মের নামে ধর্ম নষ্ট করা বা দুনিয়া উপার্জন,বা সমাজের মুসলমানদের ঐক্য - শান্তি বিনষ্ট করা হতে হেফাজত করুন৷ আমিন।

লেখক: প্রধান মুফতি, মারকাযুল ফিকহ আলইসলামী ঢাকা।

ওআই/আবদুল্লাহ তামিম


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ