শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বিস্ময়কর হাফেজ শিশুর সঙ্গে শায়খ আহমাদুল্লাহ মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর জানাযা ও দাফন সম্পন্ন ১৬ টি বছর জুলুম-ষড়যন্ত্রের মধ্যে ছিল মাদরাসার ছাত্ররা: ড. শামছুল আলম  ‘সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় সংস্কার কমিশন’ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসানের ইন্তেকালে খেলাফত মজলিসের শোকপ্রকাশ কাল ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় রোজায় বাজার সহনশীল রাখার চেষ্টা করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে বিএনপি মহাসচিবের শোক রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ যেসব সুপারিশ সংস্কার কমিশনের বাংলাদেশিদের সুখবর দিলো ইতালি, পুনরায় ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত

হে চক্ষুষ্মানরা! তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করো

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাহদী হাসানাত খান

সাম্প্রতিক সময়ে সারা বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ‘বনি আদম’। করোনা নামক ভাইরাসটি নীরব মারণাস্ত্র। যার ভয়াল নিস্তব্ধ প্রভাবে স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে পুরো বিশ্ব। সকল শ্রেণি ও পেশাদারদের কর্মচঞ্চলতা স্থবির হয়ে গেছে। ধনী কিংবা গরিব সকলেরই জীবনমান পরিচালনায় রুটিনমাফিক কর্মকাণ্ডে ব্যত্যয় ঘটেছে। শ্লোথ হয়ে এসেছে জীবনসংগ্রাম। মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের জমায়েতে ভাটা পড়েছে।

কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের প্যান্ডামিক বা মহামারিতে নিজ অবস্থানে বাসায় থেকে নামাজসহ অন্যান্য ইবাদত আদায়ের নির্দেশ প্রদান করেছেন।

হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে হারেছ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘এক বর্ষণমুখর দিনে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) মুয়াজ্জিনকে বললেন, যখন তুমি (আজানে) ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’ বলবে, তখন ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ বলবে না; বলবে, ‘সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম’ (তােমরা নিজ নিজ গৃহে নামাজ আদায় করো)।

তা লােকেরা অপছন্দ করল । তখন তিনি বললেন, আমার চেয়ে উত্তম ব্যক্তি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা করেছেন। জুমুআ নিঃসন্দেহে জরুরি। আমি অপছন্দ করি যে, আপনাদের মাটি ও কাদার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করার অসুবিধায় ফেলি। [সহিহ বুখারি : ৯০১, সহিহ মুসলিম : ৬৯৯]’ অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কোনো বান্দা যদি কোনো নেক কাজ নিয়মিত পালন করে।

অতঃপর কোনো রোগ বা ভ্রমণের অপরাগতার কারণে সেই আমলে ছেদ পড়ে, তাহলে গৃহ অবস্থানকালীন সুস্থতার দিনগুলোতে কৃত আমলগুলোর সমপরিমাণ সওয়াব তার আমলনামায় লিপিবদ্ধ হবে। [সুনানে আবু দাউদ, কিতাবুল জানায়েজ : ২৭৩৬]’

যেহেতু নেক কাজ ঘরে আদায়ের ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেহেতু মহামারি প্রাদুর্ভাবের সময়ে অহেতুক ঘোরাফেরা করে নিজেকে বিপদে ফেলার ব্যাপারেও রয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। ধ্বংসাত্মক জায়গায় নিজেকে ফেলে জীবনের শংকা সৃষ্টি করতে বারণ করে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন, ‘আর নিজের জীবন ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করো। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ অনুগ্রহকারীদের ভালোবাসেন। [সুরা বাকারা : ১৯৫]’

ঘরে থেকে নিজের জীবন রক্ষা করা যেমন মহান আল্লাহর নির্দেশ, তেমনই ঘর থেকে বের না-হয়ে অন্যদের যেকোনো বিপদ থেকে সুরক্ষিত রাখাও আমাদের অবশ্যকর্তব্য। আর এতে করে রয়েছে অশেষ সওয়াব এবং বিশেষ পুরস্কারের ঘোষণা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মহামারি হলো, আজাব। যাদের ওপর ইচ্ছা, মহান আল্লাহ এ আজাব পাঠান।

পরিশেষে তিনি তা ইমানদারদের জন্য রহমত বানিয়ে দেন এভাবে, কোনো বান্দা যদি মহামারি আক্রান্ত এলাকায় থাকে এবং সেসময় নিজ বাড়িতে ধৈর্য সহকারে সওয়াবের নিয়তে এ বিশ্বাস বুকে নিয়ে অবস্থান করে যে, মহান আল্লাহ তাকদিরে যা চূড়ান্ত রেখেছেন, তার বাইরে কোনো কিছু তাকে আক্রান্ত করতে পারবে না, তাহলে তার জন্য রয়েছে একজন শহিদের সমপরিমাণ সওয়াব। [মুসনাদে আহমদ : ২৬১৮২]’

দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে খেয়াল রাখা উচিত, মহান আল্লাহর আদেশ বৈ কারও কিছু করার এতটুকু ক্ষমতা নেই। মহান আল্লাহ হচ্ছেন একমাত্র খালেক বা সৃষ্টিকর্তা; আর বাকি সব মাখলুক বা মহান আল্লাহর সৃষ্টি। মাখলুক কিছুই করতে পারে না মহান আল্লাহর আদেশ ছাড়া, আর মহান আল্লাহ সবকিছু করতে পারেন মাখলুক ছাড়া।

সবকিছু মহান আল্লাহর মুখাপেক্ষী, তিনিই একমাত্র অমুখাপেক্ষী। মহান আল্লাহর নির্দেশেই হয় সবকিছু। তদ্রূপ কোনো ভাইরাসেরও ক্ষমতা নেই নিজে নিজে সংক্রমণ হওয়া। মহান আল্লাহর নির্দেশেই সংক্রমণ হয়। হজরত জাবের (রাদি.) বলেন, সাকিফের প্রতিনিধি দলের মাঝে একজন কুষ্ঠ রোগী ছিলেন। লোকটি বাইআত হতে এসেছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন লোকমারফত তাকে বলে পাঠান, ‘তুমি ফিরে যাও। আমি তোমার বাইআত নিয়ে নিয়েছি।’ এ হাদিস বর্ণনার পর ইমাম বাইহাকি (রহ.) লিখেছেন, ‘মহান আল্লাহ মাঝে মাঝে নিজ ইচ্ছায় দোষযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে সুস্থ ব্যক্তির সংমিশ্রণকে নতুন সংক্রমণের কারণ বানিয়ে দেন। [আস সুনানুস সগির, খণ্ড : ৩, হাদিস : ২৫১৫]’

পাশাপাশি জনস্বার্থে সরকারকর্তৃক বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা মেনে চলাও অত্যাবশ্যকীয়। মানবতার নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিজ্ঞানসম্মত দিক-নির্দেশনা নিঃসন্দেহে নির্বিশেষে সবার জন্য উপকারী। লকডাউন বা সংক্রমণ এড়ানোর স্বার্থে বিচ্ছিন্নকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মহামারি হচ্ছে আজাবের নিদর্শন। মহান আল্লাহ এর মাধ্যমে তাঁর কিছু বান্দার পরীক্ষা নিয়ে থাকেন।

কাজেই তোমরা যদি কোথাও মহামারির সংবাদ শোনো, তাহলে কখনোই সেখানে যাবে না। আর যদি তোমাদের বসবাসের নগরীতে মহামারি দেখা দেয় তাহলে সেখান থেকে পলায়ন করবে না। [সহিহ মুসলিম, বাবুত তাউন : ৫৯০৭]’

হোম কোয়ারেন্টিন বা ঘরে অবস্থানের সময়গুলো হেলায়-ফেলায় নষ্ট করা যাবে না। বরঞ্চ ফরজ আমলসহ বিশেষ বিশেষ নফল আমলের প্রতি মনোযোগী হওয়া বাঞ্ছনীয়। কেননা করোনাসহ সব ধরনের মহামারি মহান আল্লাহর ক্রোধের নিদর্শন। আর মহান আল্লাহ আমাদের ঔদ্ধত্য, অশ্লীলতা এবং পাপাচারের দরুন আজাব হিসেবে মহামারি প্রেরণ করেন। যার ফলশ্রুতে আজ এই করোনা মহামারি। মহান আল্লাহ চাইলে, আমাদের সমূলে ধ্বংস করতে পারেন নিমেষে। কিন্তু তিনি তা করেননি। তিনি চান, আমরা যেন তওবা-ইস্তেগফার করে করে তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করি।

মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে; যার ফলে তাদের কোনো কোনো কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান। যাতে তারা ফিরে আসে। [সুরা রূম : ৪১]’ হাদিস শরিফে এসেছে, ‘হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাদি.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যখনই কোনো সম্প্রদায়ের মাঝে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে; এমনকি তারা প্রকাশ্যে নির্লজ্জ কর্মকাণ্ড করতে থাকে তখন অবশ্যই তাদের মাঝে এমন নতুন নতুন মহামারি ও যন্ত্রণাকর ব্যাধির প্রাদুর্ভাব ঘটে, যা তাদের অতীতের কারও মাঝে কখনই দেখা দেয়নি। [ইবনে মাজাহ, বাবুল উকুবাত : ৪০১৯]’

এ সময় হা-হুতাশ করা নির্বুদ্ধিতার পরিচয়। মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের এমন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরতে বলেছেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। [সুরা বাকারা : ১৫৫]’

মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থার সাথে ধৈর্যধারণ করে সমস্ত বিপদাপদ থেকে বাঁচতে বিশেষ আমল করা প্রয়োজন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় এই দোয়াটি তিনবার পড়ে, তাহলে কোনো কিছু তাকে কোনো ধরনের ক্ষতি করবে—এমনটি হতে পারে না।’ অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘সকালে পড়লে সন্ধ্যা পর্যন্ত অতর্কিত কোনো বিপদে সে আক্রান্ত হবে না। আর সন্ধ্যায় পড়লে পরের দিন সকাল পর্যন্ত অতর্কিত কোনো বিপদে সে আক্রান্ত হবে না। [আবু দাউদ : ৫০৯০, তিরমিজি : ৩৩৮৮, ইবনে মাজাহ : ৩৮৬৯]’

আরবিতে: ”بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ, وَلَا فِي السَّمَاءِ, وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ.“

উচ্চারণ:“বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়া দুররু মা‘আসমিহি শাইয়ুন ফিল-আরদি, ওয়া লা ফিসসামায়ি, ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম।”

অর্থ: “(আমার দিন বা রাতের সূচনা করছি) ওই মহান আল্লাহর নামে, যাঁর নামের সঙ্গে আসমান-জমিনের কোনো কিছু কোনো ধরনের ক্ষতি করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।”

পাশাপাশি করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে হাদিস শরিফে বর্ণিত এই দোয়া নিয়মিত পড়তে হবে। হজরত আনাস (রাদি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ভয়াবহ রােগ-ব্যাধি থেকে বাঁচার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দোয়া পড়তেন,

আরবিতে: اَللَّهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ, وَ الْجُنُوْنِ, وَ الْجُذَامِ, وَمِنْ سَىِّءِ الْاَسْقَامِ.“

উচ্চারণ:“আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাসি, ওয়াল জুনুনি, ওয়াল জুজামি, ওয়া মিন সায়্যিইল আসকাম।”

অর্থ: “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই—শ্বেত, উন্মাদনা, কুষ্ঠ এবং সব ধরনের দুরারােগ্য ব্যাধি থেকে। [ আবু দাউদ : ১৫৫৪]”

দুর্যোগপূর্ণ প্রতিকূল এই সময়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নেক কাজ হচ্ছে দান-সদকা করা। যা অনেক বড় নেক আমল। কর্মহীন এই স্থবির সময়ে নিম্নবিত্তসহ বিশেষ করে মধ্যবিত্তরা হয়ে পড়েছেন কোনঠাসা। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে তাঁদের। অভাবের বোঝা মাথায় নিয়ে মানবেতর দিনাতিপাত করছেন অনেকে। আত্মসম্মানার্থে যাঁদের বেশিরভাগ জনই কারও কাছে হাত পাততে পারেন না। তাঁরাই দান-সদকা পাওয়ার প্রকত হকদার।

খুঁজে খুঁজে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো মানবিক দায়িত্ব। এতে রয়েছে অনেক সওয়াব। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘অভাবগ্রস্ত তো কেবল সে নয়—যে একমুঠো খাবারের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ায়; বরং প্রকৃত অভাবগ্রস্ত তো ওই ব্যক্তি যার জীবিকা নির্বাহের সাধ্য নেই, আবার তাকে দেখে বুঝাও যায় না যে, মানুষ তাকে দান করবে এবং সে মানুষের কাছে চাইতেও যায় না। [বুখারি : ১৪৬৯]’ দান-সদকা করার অন্যতম বিশেষ ফায়দা হলো, এতে বিপদাপদ দূর হয়। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘নিশ্চয় দান-সদকা মহান আল্লাহর গজব-ক্রোধকে নির্বাপিত করে এবং খারাপ মৃত্যু থেকে রক্ষা করে। [জামে তিরমিজি : ৬৬৪; শুআবুল ইমান, বায়হাকি: ৩০৮০; ইবনে হিব্বান : ৩৩০৯]’ দান-সদকা করলে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

পবিত্র কুরআনের বাণী, ‘যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-সদকা করো, তবে তা কতই না উত্তম। আর যদি গোপনে ফকির-মিসকিনকে দান করে দাও, তবে আরও বেশি উত্তম। আর তিনি তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। [সুরা বাকারা : ২৭১]’ আর এই দান-সদকা করতে হবে যথাসাধ্য সামর্থ্য অনুযায়ী। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা আপনার নিকট জিজ্ঞাসা করে, তারা কী ব্যয় করবে? (আল্লাহ বলেন,) জানিয়ে দিন, যা তোমাদের প্রয়োজনাতিরিক্ত। [সুরা বাকারা : ২১৯]’ দান-সদকা করলে একদিকে যেমন অভাবীদের অভাব লাঘব হবে, অন্যদিকে অশেষ সওয়াবের পাশাপাশি আমাদের বিপদাপদও দূরীভূত হবে, ইনশাআল্লাহ।

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির এই স্পর্শকাতর সময়ে আসুন, দাম্ভিকতা পরিহার করে, বিনম্র হই। কেননা সমস্ত সুপার পাওয়ার এখন অসহায়—যা আমাদের সামনে সুস্পষ্ট। গুনাহ বর্জন করে, তওবা-ইস্তেগফারে মশগুল হই। পাপের কলুষতা মুক্ত জীবন গড়ি। দোয়া ও নেক কাজের মাধ্যমে আল্লাহমুখী হই। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘...আমি তাদের অর্থসংকট ও দুঃখ-কষ্ট দিয়ে পাকড়াও করেছি, যাতে তারা বিনয়ের সাথে নতি স্বীকার করে। [সুরা আনআম : ৪২]’

বিপদাপদ আসার মধ্যে বড় হেকমত এই থাকে যে, মানুষ এর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে। চলমান মহামারি থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য অনেক উপাদান আছে আমাদের জন্য। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং হে চক্ষুষ্মানরা! তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করো। [সুরা হাশর : ০২]’ মহান আল্লাহ আমাদের যথাযথ শিক্ষা গ্রহণের তাওফিক দান করুন এবং ক্ষমা করুন, আমিন।

লেখক: তরুণ আলেম, লেখক। শিক্ষক, জামিয়াতুল আশরাফ ঢাকা।

ওআই/আবদুল্লাহ তামিম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ