মুফতি মানসুর আহমাদ।।
আমার মেজো মেয়ে বয়স আট। আলহামদুলিল্লাহ সে আজকের রোজাটি পূর্ণ করেছে। তার জীবনের প্রথম রোজা। একান্ত আগ্রহে সে রোজাটি রেখেছে। পূর্ণ করতে পারবে বলে আমাদের ধারণা ছিল না। কারণ, সারা দিনই কয়েক ঘন্টা পর পর কিছু না কিছু খাওয়ার অভ্যাস। তাই ওর আম্মুকে আমি বলে রেখেছিলাম, দুপুরের দিকে না-পারার মতো কিছু নজরে এলে বা সে নিজেই কিছু বললে রোজা ভাঙ্গিয়ে দিতে।
আল্লাহর ইচ্ছায় এমন কিছু হয় নি। তার মনে প্রচন্ড আগ্রহ ছিলো। সেহেরির পর তার সাহস বাড়ানোর জন্য আমি শুধু এতটুকুন বলেছিলাম যে, তুমি যদি চিন্তা কর- 'আমি পারবোই' তাহলে আল্লাহ তোমার জন্য সহজ করে দেবেন। সত্যিই আল্লাহ সহজ করেছেন। পুরো সময়টাতে অন্য দিনের মতোই স্বাভাবিক ছিলো। কিছু সময় পড়াশোনা করে অবশিষ্ট সময় হেসে খেলে কাটিয়েছে। ইফতারের সময় তো তার মনে মুখে বিজয়ের হাসি।
ইসলামে শৈশব থেকেই সন্তানদেরকে নামাজ-রোজায় অভ্যস্থ করতে বলা হয়েছে।
عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ الرَّبِيعِ بْنِ سَبْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " مُرُوا الصَّبِيَّ بِالصَّلاَةِ إِذَا بَلَغَ سَبْعَ سِنِينَ وَإِذَا بَلَغَ عَشْرَ سِنِينَ فَاضْرِبُوهُ عَلَيْهَا
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ শিশুর বয়স সাত হলেই তাকে নামাজের নির্দেশ দিবে এবং তার বয়স দশ হয়ে গেলে এর জন্য তাকে প্রহার করবে।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৯৪
ইমাম ইবনে কাসির রহ. সূরা তাহরিমের ৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় উক্ত হাদিস উল্লেখ করে বলেন
قال الفقهاء: و هكذا في الصوم ليكون ذلك تمرينا له على العبادة ফকিহগণ বলেছেন: অনুরূপ রোজার ক্ষেত্রে। তার জন্য তা যেন ইবাদতের চর্চা হয়।
অবশ্য রোজার ক্ষেত্রে বিষয়টি সাবধানতার সাথে নিতে হবে। তাদের শারীরিক সামর্থ্যের ব্যাপারটি লক্ষ্য রাখতে হবে । কারণ, নামাজের আমল অল্প সময়ের। অথচ একেকটি রোজা পূর্ণ হতে সময় লাগে বর্তমানে চৌদ্দ ঘন্টারও বেশি।
লেখক, প্রধান মুফতি- বাইতুস সালাম মাদরাসা, উত্তরা, ঢাকা।
ওআই/আবদুল্লাহ তামিম