ফরহাদ খান নাঈম।।
আপনি কি জানেন, ‘কোয়ারেন্টাইন’ শব্দটি সর্বপ্রথম মুসলিম বিজ্ঞানী আবু আলী আল হুসাইন ইবনে সিনা তাঁর গবেষণা কর্মে চয়ন করেন? পশ্চিমা দেশগুলোতে তিনি এ্যাভিসিনা নামে সুপরিচিত।
সেসময় তিনি মনে করতেন, বেশ কিছু রোগ আছে যেগুলো ক্ষুদ্র অনুজীবের মাধ্যমে একজনের দেহ থেকে অন্যজনের দেহে প্রবেশ করে। আর এই অনুপ্রবেশ ঠেকানোর একমাত্র উপায় হলো আক্রান্ত ব্যক্তিকে ৪০ দিন নিরাপদ দূরত্বে রাখা।
তিনি পদ্ধতিটির নাম দেন আল-আরবাঈন যার অর্থ হলো চল্লিশ দিন। ইবনে সিনা পুর সিনা, আবু আলী সিনা ও পাশ্চাত্যে এ্যাভিসিনা নামেও সমধিক পরিচিত। তিনি ছিলেন একজন পারস্য বহুশাস্ত্রবিদ। তিনি জ্যোতির্বিদ্যা ও চিকিৎসাশাস্ত্রে তাঁর অভূতপূর্ব গবেষণার জন্য বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁকে ইসলামী স্বর্ণযুগের চিন্তাশীল লেখক বলা হয়।
এ্যাভিসিনা (একেএ ইবনে সিনা) কে আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। তিনি ছিলেন তাঁর সময়কার সবচেয়ে প্রভাবশালী দার্শনিক।
এরিস্টটলীয় দর্শন দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনিও ভ্রাম্যমান দর্শনকে বেছে নেন। তাঁর লিখিত প্রায় ২৪০টি বইয়ের সন্ধান পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৪০টি চিকিৎসা বিষয়ক আর ১৫০টি দর্শন বিষয়ক। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, তাঁর লেখা বইয়ের প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি।
তার উদ্ভাবিত আল-আরবাঈন পদ্ধতিটি ভেনিসের বণিকদের মাধ্যমে ইতালিসহ সমগ্র ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। ইতালীয়রা এটিকে ‘কোয়ারেন্টিনা’ নামে নামকরণ করে। যেটির বাংলা অর্থ হয় চল্লিশ। এবং পরবর্তীতে এটিকে ইংরেজি ভাষায় ‘কোয়ারেন্টাইন’ বলা হয়।
এবং ধীরে ধীরে ‘কোয়ারেন্টাইন’ শব্দটি পরিচিতি লাভ করে। একজন মুসলিম মনীষী কর্তৃক উদ্ভাবিত এই প্রক্রিয়াটিই বর্তমানে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের মোকাবেলায় ব্যবহার করা হচ্ছে।
জীবিত না থেকেও ইবনে সিনা তাঁর উদ্ভাবিত এই আল-আরবাঈন পদ্ধতির মাধ্যমে এ যুগেও সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন রক্ষা করছেন। তাঁর বিখ্যাত গবেষণাকর্মগুলোর মধ্যে দ্য কানুন অব মেডিসিন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। চিকিৎসাশাস্ত্রের এই বিশ্বকোষটি বর্তমানে বহু চিকিৎসা বিদ্যালয়ে পাঠ্যভুক্ত।
তার লিখিত বিজ্ঞান ও দর্শনশাস্ত্রীয় আরেকটি বিশ্বকোষ হলো দ্য বুক অব হিলিং। এছাড়াও রসায়ন, মনস্তত্ত্ব, যুক্তিবিদ্যা, গণিত, ইসলামী ধর্মতত্ত্ব, জ্যোতির্বিদ্যা, পদার্থ, ভূগোল এবং প্রাণীতত্ত্ব বিষয়েও তাঁর লেখা বহু গ্রন্থ পাওয়া যায়।
দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন থেকে ফরহাদ খান নাঈমের অনুবাদ
-এটি