সুফিয়ান ফারাবী
বিশেষ প্রতিবেদক>
করোনা আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে ইতিমধ্যে বেশ কিছু মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত অর্ধশতাধিক। এছাড়াও বিভিন্ন হাসপাতালে ও নিজ বাসায় কোয়ারেন্টিনে আছেন অসংখ্য মানুষ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গন জমায়েত জনসমাগম বা গণজমায়েত এড়িয়ে চলার বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিয়মিত সর্বোচ্চ গন জমায়েত হয় প্রতি সপ্তাহে জুমার নামাজে। মানুষের উপচে পড়া ভিড় হয় প্রতিটি মসজিদে।
গণজমায়েতই যখন করোনা ভাইরাস সংক্রমনের প্রধান কারণ, এমন সময়ে কেমন হওয়া উচিত জুমার নামাজ- এ বিষয়ে আওয়ার ইসলামের মুখোমুখি হয়েছিল দেশের দু'জন প্রখ্যাত আলেমের।
তারা বলছেন, অজু সুন্নত ও সর্বপ্রকার নফল নামাজ হবে নিজ নিজ গৃহে। শুধুমাত্র জুমার নামাজ হতে পারে জামে মসজিদে।
এ বিষয়ে ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক, জামিয়া শায়েখ জাকারিয়া মাদরাসার মুহতামিম, পীরে কামেল ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ বলেন, আমরা যারা আক্রান্ত হওয়ার আশংকা করছি অথবা আক্রান্ত হয়ে গেছি তারা কোনক্রমেই মসজিদে আসবো না। এমনকি যেখানে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা আছে, এরকম স্থানে গমনাগমনও পরিহার করতে হবে।
আমরা বলব আপনি যদি অল প্রটেক্টেড হন, তাহলে আপনার জন্য মসজিদ উম্মুক্ত। কিন্তু যদি আপনি অল প্রটেক্টেড না হন, তাহলে আপনার জন্য কোন প্রকার জনসমাগমে যাওয়া উচিত হবে না। নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং অন্যকে ক্ষতিগ্রস্থ করা উভয়টি ইসলামে পরিপূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
আপনার দ্বারা আপনার পরিবার-পরিজন অথবা অন্য যেকোন মানুষ আক্রান্ত হোক এটা যেমনি ভাবে আপনি চান না, ঠিক তেমনি ভাবে শরীয়তও এটা চায়না। সুতরাং অল প্রোটেকশন না নিয়ে আপনি মসজিদে যাবেন না।
একই বিষয়ে বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র ইমাম মুফতি মহিবুল্লাহিল বাকী নাদভী বলেন, জুমার দিনে শুধুমাত্র জুমার দু'রাকাত নামাজ ছাড়া অন্যান্য সুন্নত নামাজ নফল ইবাদত ঘর থেকে আদায় করে আসাটাই হচ্ছে সাহাবীদের রীতি। তারা সকলেই জুমার নামাজ ছাড়া অন্যান্য আমল ঘর থেকে আদায় করে আসছেন।
জুমার দিনে আমাদের দেশে যে বাংলা ওয়াজ হয় সেটা নফল। বর্তমান যে প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে তাতে বাংলা ওয়াজ পরিহার করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। জীবন রক্ষা করা ফরজ। যে ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে তার রোগের উপসর্গ দেখা দেওয়ার সর্বশেষ সময়সীমা ১৪ দিন। কিন্তু তিনি ভাইরাস সংক্রমণ করবেন যেদিন থেকে আক্রান্ত হয়েছে সেদিন থেকেই।
সুতরাং বাছাই করে মসজিদে মুসল্লি ঢুকানো কোনক্রমেই সম্ভব নয়। এজন্য জনসমাগম এড়িয়ে চলা, জনাকীর্ণ এলাকা পরিহার করতে হবে। এমনকি বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউ যদি মসজিদে না এসে ঘরে নামাজ আদায় করে নেয়, তবুও তিনি গুনাহগার হবেন না।
-এটি