সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


হোম কোয়ারেন্টিন, কোয়ারেন্টিন এবং আইসোলেশনের মধ্যে পার্থক্য

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সম্পর্কে অহেতুক আতঙ্কিত না হয়ে তা প্রতিরোধে সতর্কতা অবলম্বন করুন। অবহেলা না করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া নির্দেশগুলো সঠিকভাবে মেনে চলুন।

হাত ধোয়া, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইত্যাদি ব্যবহারের পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকার জানিয়েছে, মানুষদের উচিত গৃহবন্দি অবস্থায় থাকা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।

রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টিন, হোম কোয়ারেন্টিন এবং আইসোলেশনের ব্যবস্থা করেছে সরকার। কিন্ত অনেক মানুষের কাছে এই তিনটি শব্দের মানে অজানা। আসুন জেনে নিই আইসোলেশন, হোম কোয়ারেন্টিন এবং কোয়ারেন্টিনের মধ্যে পার্থক্য।

কোয়ারেন্টিন

কোয়ারেন্টিন এর অর্থ হলো সংক্রামক রোগের সংক্রমণ বন্ধ করার জন্য কোনও ব্যক্তির পৃথকীকরণ। অর্থাৎ, কোনও ব্যক্তির শরীরে রোগটি বাসা বেঁধেছে কি না বা সে আক্রান্ত হয়েছে কি না এটা বুঝতেই সেই ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। অন্য রোগীর কথা ভেবে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা কখনই হাসপাতালে করা হয় না, করোনা হতে পারে এমন ব্যক্তিকে সরকারি কোয়ারেন্টিনে পয়েন্টে রাখা হয়।

করোনা ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পরেই তার উপসর্গ সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায় না। সপ্তাহ খানেক কোনও লক্ষণ প্রকাশ না করেই ভাইরাসটি শরীরের মধ্যে থাকতে পারে। কোনও ব্যাক্তি করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলে বা করোনা আক্রান্ত কোনও দেশ ঘুরে এলে কোভিড-১৯ তার শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। সেক্ষেত্রে সে করোনা পজিটিভ কি না তা জানতে তাকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টাইন পয়েন্ট খোলা হয়। এখানে সন্দেহজনক কোনও ব্যক্তিকে ১৪ দিন পর্যন্ত কোনও ওষুধপত্র ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। বাইরে বেরোনো বন্ধ করে দেয়া হয় এবং বাড়ির লোকের প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা থাকে।

হোম কোয়ারেন্টিন

সব নিয়ম মেনে কোনও ব্যক্তি যখন নিজেকে নিজের বাড়িতেই আলাদা করে রাখেন তখন তাকে হোম কোয়ারেন্টিন বলে। কোনও আক্রান্ত দেশ ঘুরে এলে বা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে সেই ব্যাক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় পর্যবেক্ষণ করার জন্য। এক্ষেত্রে ন্যূনতম ১৪ দিন ধরে তাকে আলাদা ঘরে রাখা হয়। কোভিড-১৯ তার শরীরে বাসা বেঁধেছে কি না তা বুঝে নিতেই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়। এক্ষেত্রেও কেবলমাত্র স্বাস্থ্যবিধি ছাড়া কোনওরকম ওষুধ দেয়া হয় না এবং কাউকে সেই ব্যক্তির কাছে ঘেঁষতে দেয়া হয় না।

আইসোলেশন

কারও শরীরে যদি করোনার লক্ষণসহ সোয়াব টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ হয় তবে সেই ব্যক্তিকে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো আইসোলেশনে পাঠানো হয়। হাসপাতলে সম্পূর্ণ আলাদা জায়গায় আইসোলেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়। ১৪ দিনের মেয়াদে চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে এই পর্যবেক্ষণ চলে। রোগের প্রকৃতি দেখে এই মেয়াদ বাড়তেও পারে। আইসোলেশনে থাকার সময় রোগীকে যেমন বাইরে বের হতে দেয়া হয় না, তেমনি বাইরের কোনও ব্যক্তিকে রোগীর সঙ্গে দেখা করতেও দেয়া হয় না।

এই রোগের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায় এরকম কিছু ওষুধ এবং খাবার দিয়ে রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। যেহেতু এই রোগের কোনও প্রতিষেধক নেই তাই কিছু অ্যান্টি-ভাইরাল ঔষধ প্রয়োগ করে রোগীকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) রিপোর্ট অনুযায়ী করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর হার অত্যন্ত কম (৩-৪%)। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম অথচ সংক্রমণের ব্যাপ্তি বেশি তাদের সুস্থ হয়ে ওঠার প্রবণতা কম থাকে। অপরপক্ষে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং সংক্রমণের ব্যাপ্তি কম তারা এই পদ্ধতিতে সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ