আওয়ার ইসলাম: প্রাণঘাতী মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সৌদি আরবেও জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞারোপ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা থেকে বাদ যায়নি ধর্মীয় সভাসমাবেশ ও মসজিদে নামাজের জামাত।
শুক্রবার থেকে সৌদির পবিত্র দুই মসজিদ আল হারামাইনিশ শারিফাইনেও মুসল্লিদের উপস্থিতি ও প্রবেশে সীমাবদ্ধতা জারি করেছে দেশটির কতৃপক্ষ। এরমধ্যেও স্বল্প পরিসরে গতকাল পবিত্র জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় মদিনা মুনাওয়ারার মসজিদে নববী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে। এ সঙ্কটময় সময়ের চিত্র ফুটে উঠেছে পবিত্র হারামাইনের ইমাম আবদুর রহমান সুদাইসের আবেগমথিত বিভিন্ন টুইট প্রকাশ পাচ্ছে।
১, ‘হে আল্লাহ! আমাদেরকে আপনার ঘর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েন না। আমাদের পাপের কারণে আমাদেরকে জামাতে নামাজ থেকে বঞ্চিত করবেন না। আমাদেরকে আপনার কাছে আবার ফিরিয়ে নিন। আমাদের তওবা কবুল করুন। আমাদেরকে এবং সকল মুসলমানকে সর্বপ্রকার মহামারি ও দূরারোগ্য ব্যাধি থেকে হেফাজত করুন।’
২. ‘আল্লাহ! মুসিবত কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। চতুর্দিক অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। তুমি ছাড়া আমাদের ফরিয়াদ করার কেউ নেই। তুমি ছাড়া কে আছে, যার কাছে আমরা সাহায্য চাইতে পারি! আমাদের অবস্থার ওপর দয়া কর। আমাদের অক্ষমতাগুলো ক্ষমা কর। তুমিই আমাদের অভিভাবক। আল্লাহ! এই বিপদ মহামারির কারণে তোমার ঘরে যেতে না পারার ব্যথা আর সইতে পারছি না। হে মহান শক্তিমান, দয়া করে এই মহামারি দূর করে দাও।’
৩. আজ থেকে আমরা মুয়াজ্জিনকে বলতে শুনব- সল্লু ফি রিহালিকুম (নিজ নিজ জায়গায় নামাজ পড়ে নাও)। হে আল্লাহ! যদি আমাদের পাপের কারণে তোমার ঘরে নামাজ পড়া থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকি তাহলে আমরা তওবা করছি সকল গুনাহ থেকে। দয়া করে তুমি আমাদেরকে তোমার ঘরে আবার ফিরিয়ে নাও। আমাদের দেশ থেকে এবং সকল মুসলিম দেশ থেকে তুমি এই মহামারি দূর করে দাও।
৪. তুমি থাকতে কার কাছে অভিযোগ করব আল্লাহ! তোমার দুয়ার থাকতে কার দুয়ারে হাত পাতব! তুমিই তো একমাত্র মাবুদ। তোমাকে ছেড়ে আমরা কার ইবাদত করব! তোমার ওপরই আমাদের সকল আশা ভরসা। হে আল্লাহ, আমাদেরকে সে সকল লোকদের অন্তর্ভুক্ত কর যারা নিয়ামত পেলে শোকর করে। বিপদে সবর করে। গুনাহ হয়ে গেলে তওবা করে।
৫. এই মহামারির সময় ‘লা হাউলা ওয়া লা-কুয়াতা…’ বেশি বেশি পড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি লিখেছেন, যদি বিপদগ্রস্তরা জানত, ‘লা হাউলা… পড়ার মাঝে কত বিপদমুক্তি, কত প্রশান্তি, আল্লাহর কত মদদ ও নুসরত (দয়া) আছে তাহলে তারা এটাকে এমনভাবে পড়া শুরু করত যে এক মুহূর্ত বিরাম নিত না। চলতে ফিরতে উঠতে বসতে শয়নে স্বপনে জাগরণে সর্বাবস্থায় পড়তে থাকত- ‘লা হাউলা ওয়া লা-কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়িল আজিম।’ আল্লাহ! তোমার কাছেই আমানত রাখছি এই পবিত্র নগরী ও তার বাসিন্দাদের। নারী-পুরুষ, যুবা, বৃদ্ধ, শিশু, ঘরবাড়ি, আকাশ-মাটি সবকিছু তোমার কাছেই আমানত রাখলাম। দয়া করে তুমি এগুলোকে মহামারি থেকে হেফাজত কর। তোমার কুদরতে তুমি করোনা ভাইরাস দূর করে দাও।
৬. বিপদ যত বড় হোক তা চিরদিনের নয়। বিপদ যত বড় হোক, আল্লাহর রহমত তার চেয়ে বড়। ইনশাআল্লাহ, আমাদের মুক্তি অতি সন্নিকটেই। সুতরাং হতাশ হবেন না। অধৈর্য হবেন না। অস্থিরতা প্রকাশ করবেন না। আল্লাহকে ডাকতে থাকুন। তার ওপর ভরসা রাখুন। তার সিদ্ধান্তের ওপর নিজের সবকিছু অর্পণ করুন। অন্যকেও আল্লাহর ওপর ভরসা করে নিশ্চিন্তে থাকতে বলুন।
আরএম/