সুফিয়ান ফারাবী
উত্তরা থেকে
মিশরের প্রসিদ্ধ প্রতিষ্ঠান মারকাজুত তিবিয়ানের শাইখুল হাদিস মাওলানা সানাউল্লাহ আজহারী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দারুল আরকাম আল ইসলামিয়া ঢাকায় 'কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার পথ ও পদ্ধতি' বিষয়ক শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্টিঠত হলো।
গতকাল দিনব্যাপী এ আয়োজনে দেশের প্রখ্যাত আলেম, দাঈ, লেখক, কবিসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। মাওলানা সানাউল্লাহ আজহারীর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শায়েখ আহমাদুল্লাহ আশরাফ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি মুসা আল হাফিজ।
মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ বলেন, ওয়াজ মাহফিল এবং এ জাতীয় ইসলামি সম্মেলনে আমাদের আলোচনা হওয়া উচিত পরিপূর্ণ কুরআন ও হাদিস কেন্দ্রিক।
কুরআন এবং হাদিস ভিত্তিক আলোচনা আমরা একেবারেই ভুলে গেছি। আমাদের আলোচনা জুড়ে থাকে বড় বড় কিচ্ছা-কাহিনী, মানুষকে হাসানো এবং কাঁদানোর উপাদান, আমাদের আলোচনায় কুরআন এবং হাদিসের পরিমাণ থাকে খুবই কম। আর এটাও আমাদের পতনের একটা কারণ।
স্পষ্টভাবে সহিহ মুসলিমের হাদিস এমনটাই বলছে। إن الله يرفع بهذا الكتاب اقواما ويصعب به آخرين (আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কোন একটি জাতিকে এই কিতাবের কারণে মর্যাদাশীল করেন, এবং অন্য একটি জাতিকে পদস্খলন করেন।"
তিনি বলেন, আমাদের এই উপমহাদেশে আমরা কুরআনকে অধ্যায়ন করি না, তেলাওয়াত করি। কোরআন বুঝে পড়ার চেয়ে আমরা শুধুমাত্র তেলাওয়াত করাটাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এটা খুবই দুঃখজনক। আমাদের মনে রাখতে হবে, কুরআন বুঝে পড়া ও না বুঝে পড়া উভয়ের মধ্যে যদিও পূণ্য রয়েছে, কিন্তু বুঝে পড়ার বিষয় দিকনির্দেশনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অনেকের অভিযোগ নামাজে মন বসে না, তারা যদি কুরআনের অর্থ বুঝতেন তাহলে তাদের এই সমস্যাটা চলে যেত। অথবা বুঝে পড়ার চেষ্টা করতেন তাহলে নামাজে আরো মনোযোগী হওয়া সহজ হতো।
প্রোগ্রামের দ্বিতীয় অধিবেশনে দারুল আরকাম আল ইসলামিয়ার বিভিন্ন ক্লাসের শিক্ষার্থীরা দুটি এরাবিক নটিকা উপস্থাপন করেন। প্রথমটি ইমামদের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধা নিয়ে নির্মিত। আর দ্বিতীয় নটিকার মাধ্যমে ছাত্রদেরকে আরবি ব্যাকরণ এ পারদর্শী করে তোলা ছিল মূল উদ্দেশ্য।
আগত শ্রোতা ও দর্শকবৃন্দ উপস্থাপিত দুটি নটিকা দেখে মুগ্ধ অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন। পরিশেষে মুসলিম বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য দোয়া কামনায় শেষ হয় আলোচনা সভা।
আরএম/